অসুস্থ ও অতিবৃদ্ধের সিয়াম ?

★ অসুস্থতা কিংবা অতিবার্ধক্যের জন্য যারা রোযা রাখতে পারেননি, তাদের বিধান কী?
– অসুস্থতাকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে:
১. সাময়িক অসুস্থতা: যে অসুস্থতা থেকে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেক্ষেত্রে সুস্থ হওয়ার পর ভাঙতি রোযাগুলো রেখে দিতে হবে।
২. স্থায়ী অসুস্থতা কিংবা অতিবার্ধক্য: যে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, সেই ক্ষেত্রে প্রতিটি ভাঙতি রোযার জন্য ফিদইয়া দিতে হবে অর্থাৎ ১ জন গরীবকে খাওয়াতে হবে।


★ গর্ভবতী কিংবা স্তন্যদাত্রী মা, যিনি নিজের কিংবা সন্তানের সম্ভাব্য ক্ষতির জন্য রোযা রাখতে পারেননি, তার বিধান কী?
– এক্ষেত্রে ৩ টি মত রয়েছে:
ক. ইমাম আবূ হানিফা রহিমাহুল্লাহ এর মতে, ভাঙতি রোযাগুলো সুস্থ হওয়ার পর রেখে দিতে হবে।
খ. ইমাম আহমাদ ও ইমাম শাফেয়ী রহিমাহুমাল্লাহ এর মতে, রোযাগুলো রেখে দিতে হবে এবং ফিদইয়াও দিতে হবে।
গ. আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রা. এর মতে, কেবলমাত্র ফিদইয়া দিলেই হবে, রোযা রাখতে হবেনা।

এসব মতান্তর বিবেচনার পর অধিকাংশ আলেমই প্রথম সিদ্ধান্তের সাথে একমত হয়েছেন, শাইখ ইবন উসাইমীন রহিমাহুল্লাহ এর মতামতও তাই: শুধু রোযা রেখে দিলেই হবে, ফিদইয়া দিতে হবেনা।
তবে আমার মতে, safer is better. কেউ অধিক সতর্কতার জন্য রোযা রাখার সাথে ফিদইয়া দিতে চাইলে তাতেও সমস্যা নেই, বরং উত্তম হওয়ার কথা। আল্লাহু আ’লাম।

★ প্রতি রোযার জন্য ফিদইয়ার পরিমাণ কত?
– অর্ধ সা’ পরিমাণ (মোটামুটি দেড় কেজি) খাদ্যদ্রব্য(যেমন: চাল) কোন গরীব/মিসকীনকে দিয়ে দেয়া অথবা সেই পরিমাণ রান্না করে খাওয়ানো। ভাতের সাথে কেউ এক্সট্রা ডাল, তরকারি এসব রান্না করে খাওয়ালেও সমস্যা নেই। মোটকথা বেশি দিলে দোষ নেই, নির্ধারিত পরিমাণের কম যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরী। একজন একজন করে খাওয়ালেও হবে অথবা একসাথে হিসেব করে পুরোটা রান্না করে গরীব লোকেদের খাইয়ে দিলেও চলবে।

★ হানাফি মতানুসারে ১টি রোযার ফিদইয়া হচ্ছে: একজন মিসকিনকে দুইবেলা পেটপুরে খাওয়াতে হবে অথবা সমমূল্যের টাকা দিয়ে দিলেও চলবে।
তবে টাকা দিয়ে ফিদইয়া দেয়ার ব্যাপারে অন্য মাযহাবের আলেমদের দ্বিমত রয়েছে।

তথ্যসূত্র: www.islamqa.info/en

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *