“যেখানেই তুমি থাক হে মানব যত হও সাবধান
মৃত্যু তোমাকে ধরে নেবে ঠিক পাবেনা পরিত্রাণ
মিছে ছলনায় বাঁধিলে যে ঘর সে তো তোর নয় কভু
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য যা আবশ্যক:
১/ অসুস্থ ব্যক্তির কর্তব্য হলো, আল্লাহর ফায়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকা এবং সাধ্য মোতাবেক ধৈর্য ধারণ করা ও নিজ প্রভূর প্রতি ভালো ধারনা রাখা।এটাই তার জন্য উত্তম।
হযরত জাবের রাযি থেকে বর্ণিত
عَنْجَابِرٍ،قَالَ: سَمِعْتُالنَّبِيَّصَلَّىاللهُعَلَيْهِوَسَلَّمَ،قَبْلَوَفَاتِهِبِثَلَاثٍ،يَقُولُ: «لَايَمُوتَنَّأَحَدُكُمْإِلَّاوَهُوَيُحْسِنُبِاللهِالظَّنَّ»
নাবী সঃ বলেন,“আল্লাহ তা’আলার প্রতি সুধারণ রাখা ছাড়া অন্য কোন অবস্থায় তোমাদের কেউ যেন মৃত্যুবরন না করে।”(সহীহ মুসলিম ২৮৭৭, ইবনু মাজাহ৪১৬৭নং)
২/ অসুস্থ ব্যক্তির উচিত অন্তরে ভয় ও আকাংক্ষা রাখা এবং নিজ গুনাহের জন্য আল্লাহর শাস্তিকে ভয় করা এবং আপন প্রভুর রহমত কামনা করা।
রাসূল সাঃ বলেন,
«لَايَجْتَمِعَانِفِيقَلْبِعَبْدٍفِيمِثْلِهَذَاالمَوْطِنِإِلَّاأَعْطَاهُاللَّهُمَايَرْجُووَآمَنَهُمِمَّايَخَافُ»:
“এহেন অবস্থায় যে বান্দারই অন্তরে আল্লাহর রহমতের আশা ও আযাবের ভয় পাশাপাশি থাকে, সে বান্দাকেই আল্লাহ তার আকাংক্ষিত বস্তু প্রদান করে থাকেন। আর যা সে ভয় করে তা হতে তাকে নিরাপত্তা প্রদান করে থাকেন”।(তিরমিযী-৯৮৩,ইবনু মাজাহ-৪২৬১)
৩/ অসুস্থ ব্যক্তির অসুখ খুব বৃদ্ধি পেলে মৃত্যু কামনা করা জায়েজ হবেনা। উম্মুল ফাযল রাঃ বলেন,
عَنْأُمِّالْفَضْلِ،أَنَّرَسُولَاللَّهِصَلَّىاللهُعَلَيْهِوَسَلَّمَدَخَلَعَلَيْهِمْوَعَبَّاسٌعَمُّرَسُولِاللَّهِصَلَّىاللهُعَلَيْهِوَسَلَّمَيَشْتَكِي،فَتَمَنَّىعَبَّاسٌالْمَوْتَ،فَقَالَلَهُرَسُولُاللَّهِصَلَّىاللهُعَلَيْهِوَسَلَّمَ: «يَاعَمِّ،لَاتَتَمَنَّالْمَوْتَ،فَإِنَّكَإِنْكُنْتَمُحْسِنًافَإِنْتُؤَخَّرْتَزْدَدْإِحْسَانًاإِلَىإِحْسَانِكَخَيْرٌلَكَ،وَإِنْكُنْتَمُسِيئًافَإِنْتُؤَخَّرْفَتُسْتَعْتَبْمِنْإِسَاءَتِكَخَيْرٌلَكَ،فَلَاتَتَمَنَّالْمَوْتَ»
‘আল্লাহর রাসুলের চাচা পীড়িত হলে তিনি তাঁর নিকট এলেন।আব্বাস মৃত্যু কামনা প্রকাশ করলে আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেন, “হে চাচাজান! মৃত্যু কামনা করেন না।কারণ আপনি নেক লোক হলে এবং হায়াত বেশী পেলে বেশী বেশী নেকী করে নিতে পারবেন,যা আপনার জন্য মঙ্গলময়,আর গোনাহগার হলে এবং বেশী হায়াত পেলে আপনি গোনাহ থেকে তাওবা করার সুযোগ পাবেন,সুতরাং তাও আপনার জন্য মংগলময়।অতএব মৃত্যুকামনা করেন না।(হাকেম-1254,আহকামুল জানাইয৪ পৃঃ)
কিন্তু যদি একান্তই ধৈর্য্য এর বাধ ভেংগে যায় তবে এই দু’আ করতে পারে-
اللهُمَّ أحينِي ماكانتِ الحياة خيرا لي، وتَوَفَّنِي إذَاكَانَتِ الوَفَاةُ خيرًا-
অর্থঃ “হে আল্লাহ! আমার জীবন যতক্ষণ পর্যন্ত কল্যাণকর হয় ততক্ষণ পর্যন্ত আমাকে জীবিত রাখুন এবং যখন আমার মৃত্যু কল্যাণকর হয় তখন আপনি আমাকে মৃত্যু দান করুন”।
৪/ অসুস্থ ব্যক্তির নিকট বান্দার হক্ব থাকলে তার উচিত তার সাথীদের নিকট হক্ব আদায় করে দেয়া।আর না হলে নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশ মোতাবেক অসিয়ত করা।
৫/ অসুস্থ ব্যক্তির অসিয়ত দ্রুত করা কর্তব্য। নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,“কোন মুসলিম ব্যক্তির উচিত নয় দু’রাত যাপন করা এমতাবস্থায় যে তার নিকট কিছু জিনিস রয়েছে যা সে অসিয়ত করবে আর তার মাথার নিকট লিখিত অসিয়ত রয়েছে”।
আব্দুল্লাহ ইবনে উমার বলেছেন, “যেদিন থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এটা বলতে শুনেছি অতঃপর আমার এক রাত্রিও এমন কাটেনি যে আমার নিকট ওসিয়ত থেকে গেছে”।
৬/ অসুস্থ ব্যক্তি সম্পদের এক তৃতীয়াংশ অসিয়ত করবে,এর বেশী করা যায়েজ নেই।
হযরত সা’দ ইবেন আবি ওয়াক্কাস রাযি বলেন,
عَنْعَامِرِبْنِسَعْدِبْنِأَبِيوَقَّاصٍ،عَنْأَبِيهِرَضِيَاللَّهُعَنْهُ،قَالَ: كَانَرَسُولُاللَّهِصَلَّىاللهُعَلَيْهِوَسَلَّمَيَعُودُنِيعَامَحَجَّةِالوَدَاعِمِنْوَجَعٍاشْتَدَّبِي،فَقُلْتُ: إِنِّيقَدْبَلَغَبِيمِنَالوَجَعِوَأَنَاذُومَالٍ،وَلاَيَرِثُنِيإِلَّاابْنَةٌ،أَفَأَتَصَدَّقُبِثُلُثَيْمَالِي؟قَالَ: «لاَ»فَقُلْتُ: بِالشَّطْرِ؟فَقَالَ: «لاَ»ثُمَّقَالَ: «الثُّلُثُوَالثُّلُثُكَبِيرٌ – أَوْكَثِيرٌ – إِنَّكَأَنْتَذَرَوَرَثَتَكَأَغْنِيَاءَ،خَيْرٌمِنْأَنْتَذَرَهُمْعَالَةًيَتَكَفَّفُونَالنَّاسَ،……..الخ
বিদায় হজ্বের বছর আমার অসুস্থতা বৃদ্ধি পাওয়ায় রাসূলুল্লাহ আমাকে দেখতে আসলেন, আমি বললাম,ইয়া রাসূলাল্লাহ সাঃ আমার মৃত্যু যন্ত্রণা বৃদ্ধি পাইতেছে। আমার তো অনেক সম্পদ আছে,অথচ এগুলোর ওয়ারিছ হিসেবে এক মেয়ে ছাড়া আর কেউ নেই। আমি কি আমার সম্পদের দুই তৃতীয়াংশ সদকাহ করে দিবো? তিনি বললেন,না। অতপর আামি বললাম,তাহলে অর্ধেক সদকাহ করে দেই? তিনি বললেন, না।অতপর তিনি বললেন, এক তৃতীয়াংশ, এবং এক তৃতীয়াংশ-ই অনেক বেশী। তুমি তোমার ওয়ারিছদেরকে মানুষের কাছে ভিক্ষার হাত সম্পসারণকারী চেয়ে ধনী রেখে যাওয়া-ই অনেক ভালো। (বুখারী ১২৯৫,মুসলিম ১৬২৮)
৭/ অসিয়তের ব্যাপারে দুইজন ন্যায়পরায়ণ মুসলিম ব্যক্তিকে সাক্ষী রাখতে হবে।যদি মুসলিম না পাওয়া যায় তাহলে গায়ের মুসলিম দুজন কে সাক্ষী রাখতে হবে যাতেকরে সন্দেহের সময় তাদের সাক্ষ্য দ্বারা আস্থাশীল হওয়া যায়। আরো দেখুন সুরা মায়েদাহ, (আয়াত ১০৬-১০৭)।
৮/ অসিয়ত কারীর ওয়ারিশদের জন্য অসিয়ত করা জায়েজ হবেনা।
سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ، سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ اللَّهَ قَدْ أَعْطَى كُلَّ ذِي حَقٍّ حَقَّهُ فَلَا وَصِيَّةَ لِوَارِثٍ
নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “মহান আল্লাহ প্রত্যেক হক্বদারের হক্ব দিয়ে দিয়েছেন, অতএব ওয়ারিশের জন্য কোন অসিয়ত নেই”। (আবু দাউদ ২৮৭০,তিরমিযী ২১২০,সহীহ আবু দাউদ প্রমুখ)
৯/ অসিয়তের ব্যাপারে ক্ষতিসাধন করা হারাম।যেমন কোন অংশীদারকে তার অংশ থেকে বঞ্চিত করে অসিয়ত করা।অথবা কতকের উপর কতককে প্রাধান্য দেয়া।আরো দেখুন, সুরাহ আন নিসা, (আয়াত নং ৭ এবং ১২)
১০/ অন্যায় অসিয়ত বাতিল ও পরিত্যাজ্য। নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
“যে ব্যক্তি আমার দ্বীনের মধ্যে নতুন কাজ বিদ’আত করল যা তার মধ্যে নেই সেটা পরিত্যাজ্য”
বর্তমান যুগে দ্বীনে বিশেষ করে জানাযায় বহু ভেজাল অনুপ্রবেশ করে বহু বিদ’আত রচিত হয়ে সুন্নাহর আকার ধারণ করেছে,সেহেতু মরণাপন্ন ব্যক্তির এ অসিয়ত করাও উচিত এবং ওয়াজিব যে তার দাফন কাফন শেষক্রিয়া যেন সুন্নাহ পদ্ধতি অনুযায়ী হয় এবং এ বিষয়ে কোন বিদ’আত কে প্রশ্রয় না দেয়া হয়।(জানাযা দর্পণ,১৯ পৃঃ)
অসুস্থ ব্যক্তির মৃত্যু উপস্থিত হলে তার নিকট অবস্থানকারী ব্যক্তিদের করনীয়ঃ
১/অসুস্থ ব্যক্তিকে মৃত্যু কালে কালিমার তালক্বীন দেয়া। হযরত আবু-সাঈদ খুদরী রাযি থেকে বর্ণিত,
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عُمَارَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَقِّنُوا مَوْتَاكُمْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ».
রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,“তোমরা মৃত্যু সন্নিকট ব্যক্তিকে কালেমা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ শিক্ষা দাও”। (সহীহ মুসলিম-৯১৬,তিরমিযী ৮৯৮,আবি দাউদ ২৭১০)
“মৃত্যুর সময় যার শেষ কথা‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’হবে ,একদিন না একদিন সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।যদিও সে তার পূর্বে কিছু আযাব ভোগ করবে।(মাওয়ারিদুয যামআন ৭১৯ নং,ইরওয়াউল গালীল ৬৭৯ নং)
তালক্বীনের অর্থ কেবলমাত্র মরণাপন্ন ব্যক্তির সামনে কালেমা পাঠ করে শোনানোই নয় বরং কালেমা পাঠের আদেশও তাকে করা যায়।(আহকামুল জানাইয ১০ পৃঃ) হযরত আনাস রাঃ বলেন, একদা আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনসারদের এক মরণাপন্ন ব্যক্তিকে দেখতে গিয়ে বললেন, “হে মামা! ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলুন’ লোকটি বলল,মামা নাকি চাচা? তিনি বললেন, ‘বরং মামা ’অতঃপর লোকটি বলল, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”বলা কি আমার জন্য কল্যাণকর? নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘অবশ্যই’(আহমাদ ১২৮৫)
অনুরূপ আদেশ রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চাচা আবু তালেবকেও করেছিলেন।(বুখারী ১৩৬০,আহমাদ ৫/৪৩৩)
*তবে কালেমা পড়ার জন্য বারবার আদেশ করা উচিত নয়, কারণ সেই কঠিন সময়ে সে অস্বীকার করে বসতে পারে বা অসমীচীন কথা কালেমার উপর বলে ফেলতে পারে যা অশুভ হবে।তাই আস্তে আস্তে চেষ্টা করা,যদি না বলে তবে তা আল্লাহর হাতে।
*শুধু“মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ’ বলে তালক্বীন করানো জায়েজ কিনা এ নিয়ে দুইটি মত পাওয়া যায়।একমত হলো এটি জায়েজ। অপর মত হলো শুধু এই তালক্বীন জায়েজ নয়।মৃত্যুশয্যায় কোন আহলে বায়াত বা কোন বু্যুর্গ কিংবা ওলির কথা স্মরণও স্বীকার করানো সম্পূর্ণিই বিদ’আত।
**মরণাপন্ন ব্যক্তি কালেমা পাঠ করে নিলে তার নিকট উপস্থিত সকল ব্যক্তিবর্গের উচিত আর কিছু না বলে চুপ থাকা এবং তার সাথে অন্য কথা না বলা, যাতে তার সর্বশেষ কথা ওই কালেমাই হয়।নচেৎ তারপর কথা বললে পুনরায় কালেমার তালক্বীন করা কর্তব্য (সাবউনা সুআলান ফি আহকামীল জানাইয,ইবনে উসাইমিন)
২/ মুমূর্ষুর জন্য দু’আ করা, ‘আল্লাহ ওকে ক্ষমা করে দাও’, ‘আল্লাহ ওর মরণকষ্টকে আসান করে দাও’ ইত্যাদি।
৩/ কোন প্রকারের মন্দ কথা না বলা বা অন্যায় মন্তব্য না করা।
হযরত উম্মে সালামাহ রাযি থেকে বর্ণিত, নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا حَضَرْتُمُ الْمَرِيضَ، أَوِ الْمَيِّتَ، فَقُولُوا خَيْرًا، فَإِنَّ الْمَلَائِكَةَ يُؤَمِّنُونَ عَلَى مَا تَقُولُونَ»، قَالَتْ: فَلَمَّا مَاتَ أَبُو سَلَمَةَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ أَبَا سَلَمَةَ قَدْ مَاتَ، قَالَ: ” قُولِي: اللهُمَّ اغْفِرْ لِي وَلَهُ، وَأَعْقِبْنِي مِنْهُ عُقْبَى حَسَنَةً “، قَالَتْ: فَقُلْتُ، فَأَعْقَبَنِي اللهُ مَنْ هُوَ خَيْرٌ لِي مِنْهُ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘তোমরা যখন কোন রোগী বা মরণাপন্ন ব্যক্তির নিকট উপস্থিত থাকবে তখন ভালো কথাই বলো।কেননা তোমরা যা বলবে, তার উপর ফেরেশতারা আমীন-আমীন বলবেন’। অতপর,যখন আমার স্বামী আবু-সালামাহ মৃত্যু বরণ করলেন।তখন আমি নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলাম।নাবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উপদেশ দিয়ে বললেন,বলো-হে আল্লাহ আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো।এবং আমাকে উত্তম জিনিষিএর স্থলাভিষিক্ত করে দাও। উম্মে সালামাহ বলেন,এই দু’আ বরকতে আল্লাহ আমাকে আবু-সালামাহ এর চেয়ে উত্তম স্বামী মুহাম্মদ সাঃ কে দিয়েছিলেন। ।(মুসলিম ৯১৯,তিরমিযী ৮৯৯ প্রমুখ)
৪/ অধিকাংশ স্কলার(হানাফী,শাফেঈ,হানবালী) দের মতে মরণাপন্ন ব্যক্তির পাশে বসে সুরা ইয়াসিন পাঠ করা মুস্তাহাব।
عَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اقْرَءُوا يس عَلَى مَوْتَاكُمْ»
মা’কিল ইবনে ইয়াসসার বলেনঃ ‘রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমদের মৃত্যু পথযাত্রী ব্যক্তির জন্য সুরাহ ইয়াসিন পাঠ করো”।-আবু দাউদ (৩১২১)আহমাদ(১৯৭৮৯)মিশকাত-২১৭৮
তবে অনেকে একে বিদ’আত বলেন,যারা একে বিদ’আত বলেছেন তারা উক্ত হাদিস কে দঈফ বলেন।
শাইখ আব্দুল আযিয ইবনে বায বলেন, “অসুস্থ বা মৃতোন্মুখ ব্যক্তির পাশে বসে কুর’আন তিলাওয়াত ভালো কাজ,আল্লাহ এর দ্বারা উক্ত ব্যক্তিকে উপকৃত করতে পারেন,কিন্তু একটা সুরাহ নির্দিষ্ট করাকে তিনি ভিত্তিহীন বলেন যেহেতু উক্ত হাদিসকে তিনি দইফ বলেছেন।
*উক্ত হাদীসের আলোকে কেউ কেউ কবরের পাশে বা মৃতব্যক্তির পাশে বসে সুরাহ ইয়াসিন তিলাওয়াতের পরামর্শ দিয়েছেন।তবে এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বর্ণনা পাওয়া যায়নি।
যেমন মোল্লা আলী ক্বারী রাহ লিখেন,
فَاقْرَءُوهَا عِنْدَ مَوْتَاكُمْ “، أَيْ مُشْرِفِي الْمَوْتِ أَوْ عِنْدَ قُبُورِ أَمْوَاتِكُمْ، فَإِنَّهُمْ أَحْوَجُ إِلَى الْمَغْفِرَةِ،…………..وَيُمْكِنُ أَنْ يُرَادَ بِالْمَوْتَى الْجَهَلَةُ أَوْ أَهْلُ الْغَفْلَةِ
তোমরা মৃত ব্যক্তির পাশে ইয়াসিন তেলাওয়াত করো- এর অর্থ হলো, মৃত্যু শয্যায় শায়িত ব্যক্তির পাশে বা কবরের পাশে ইয়াসিন তেলাওয়াত করো।কেননা ইয়াসিন গোনাহ সমূহকে ক্ষমা দেয়। আর এই সমস্ত লোক গোনাহ মাফের বেশী মুহতাজ। অথবা মৃত দ্বারা উদ্দেশ্য হলো,জাহিল বা গাফিল ব্যক্তি।
৫/ মূমুর্ষু ব্যক্তির মাধ্যমে মৃত কোন ব্যক্তিকে সালাম পাঠানো বিদ’আত ।
*মুমূর্ষু ব্যক্তির জন্য সংখ্যা নির্দিষ্ট করে তার ফযিলত নির্ধারণ করে আল্লাহ তা’আলার কোন নাম নিয়ে খতম দেয়া বৈধ নয়।
তবে কোন রোগে আক্রান্ত হলে তার সাথে সম্পর্কিত আল্লাহ তা’আলার কোন নাম নিয়ে আল্লাহ তা’আলাকে ডাকা যাবে। সেটা যত খুশি তত সংখ্যায় হোক, সোয়া লাখ, এক লাখ বা অন্য কোন সংখ্যায়। কিন্তু কেউ সেই সংখ্যাকে নির্দিষ্ট করে ধরে কোন ফযিলত আশা করলে, তা জায়েজ হবে না।
*অসুস্থ ব্যক্তির সুস্থতার জন্য সোয়া লাখ বার “ইয়া সালামু” বলে ‘খতমে শিফা’ নামে যে খতম প্রচলিত তা জায়েজ নেই।
* “জালালি খতম” নামে প্রচলিত যে খতম আছে যাতে এই বিশ্বাস রাখা হয় যে, যার নামে এটি পড়া হবে, এটা পড়লে ৪০ দিনের ভিতর হয় সে অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ হবে না হয় মারা যাবে, এমন বিশ্বাস ও আমল জায়েজ নেই।
*মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তির পাশে বসে দুরূদে হাজারী সহ হাদিস বহির্ভূত কোন দুরূদ পাঠের কোনো অনুমতি নেই।
মৃত্যু হয়ে গেলে করণীয়:
১/ মাইতার মুখ ক্বিবলামুখি করা নিয়ে দুইটি মত পাওয়া যায়, (এক) হলো মাইতার মূখ পশ্চিম দিকে ঘুরাতে হবে, (২)দ্বিতীয় মত হলো, এ ব্যাপারে সহীহ কোন হাদিস নেই।
২/ উপস্থিত ব্যক্তিরা মৃত ব্যক্তির চোখ বন্ধ করে দিবে, তার জন্য দু’আ করবে।
৩/ মুখ খুলে থাকলে তা বন্ধ করে দিবে,প্রয়োজনে কিছু দিয়ে বেধে দিবে,হাত পা ঢিলা করে দেবে।
৪/ কাপড় দ্বারা তার পুরো শরীর ঢেকে দিবে,কিন্তু ব্যক্তি যদি ইহরাম বাধা অবস্থায় মারা যায় তবে মাথা আর মুখ খোলা রাখতে হবে।
৫/ অতিস্বত্ত্বর তার দাফন কাফনের ব্যবস্থা করা এ ব্যাপারে বিলম্ব না করা।হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَسْرِعُوا بِالْجَنَازَةِ، فَإِنْ تَكُ صَالِحَةً فَخَيْرٌ – لَعَلَّهُ قَالَ – تُقَدِّمُونَهَا عَلَيْهِ، وَإِنْ تَكُنْ غَيْرَ ذَلِكَ، فَشَرٌّ تَضَعُونَهُ عَنْ رِقَابِكُمْ»
নাবী কারীম সাল্লাহুয়ালাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা জানাযার কার্য অতিশীঘ্রই সমাধা কর”অর্থ্যাৎ দাফনের ব্যবস্থা করো।কেননা, যদি সে নেককার হয়ে থাকে তাহলে তো ভালো, কারণ তাকে উত্তম জিনিষের দিকে অগ্রসর করে দিচ্ছো। আর যদি সে বদকার হয়,তাহলে আপদকে নিজের কাধ থেকে সরিয়ে নিচ্ছো। (বুখারী-৯৪৪,মুসলিম-১৫৬৮ক)
৬/ মৃত্যুর খবর প্রচার করা, তবে জাহেলী যুগের মত দরজায় দরজায় বাড়ি দিয়ে, চিৎকার করে, উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়ে হায় হুতাশ করে মৃত্যুর খবর ঘোষণা করা যাবে না। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন।
৭/ যে স্থানে বা এলাকায় মৃত্যু হয়েছে সেখানেই লাশ দাফন করা, অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়া দ্রুত দাফন কাফনের আদেশের বিপরীত।
৮/ কোন মর্যাদাপূর্ণ স্থানে দাফনের অসিয়ত থাকলে সেটাও মানা উচিত নয়,এমন অসিয়ত বাতিল (আযকার, নওবী,আহমাকুল জানাইয)
৯/ আবার লাশের কোন ক্ষতির আশংকা থাকলে বা বিদেশে মারা গেলে তার আত্নীয়স্বজনের দর্শন ও আশা পূরণ করার জন্য এবং যিয়ারত সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে স্বদেশে বহন করে নিয়ে এসে দাফন করাও বৈধ (মাজাল্লাতুল বহুসিল ইস্লামিয়্যাহ-১০/৬২)
১০/ মৃত ব্যক্তির বকেয়া ঋন অতিস্বত্বর শোধ করা, যদি উক্ত ব্যক্তির নিজের মাল না থাকে, তাহলে ওয়ারিসীনরা সাধ্যনুযায়ী শোধ করবে। যদি তাদের সামর্থ্য না থাকে তবে রাষ্ট্রীয় ত্রান থেকে শোধ করা হবে।যদি সেটাও সম্ভব না হয, তাহলে মুসলিমদের বিশেষ ফান্ড থেকে শোধ হবে। আত্নীয়-স্বজন যদি তার পক্ষ থেকে ঋণ শোধ করে, তবে সেট কতইনা উত্তম।
আত্নীয়স্বজনদের জন্য যা বৈধঃ
১/ আত্নীয়স্বজন এবং উপস্থিত ব্যাক্তিদের জন্য মাইয়্যিতের চেহারা খুলে দেখা এবং কপালে চুম্বন করা বৈধ(অবশ্যই মাহরাম গাইরে মাহরাম মেনে)আবু বাকর রাঃ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর তার কপালে চুম্বন করেছিলেন।তবে চেহারা দেখানোর যে রুসুম প্রচরিত রয়েছে,সে হিসেবে মাইয়্যিতের মূখ দেখানোতে শরীয়তের অনেক বিধান লঙ্গিত হয়। সুতরাং এ রুসুম কোথাও প্রচলিত থাকলে,সে রুসুম হিসেবে মাইয়্যিতের মুখ না দেখানোই উত্তম।এবং ক্ষেত্রভেদে মাইয়্যিতের উপর না দেখানোর ওসিয়ত করা জরুরী হবে। (আহসানুল ফাতাওয়া-৪/২২৯)
২/ মাইয়্যিতের জন্য চাপা কান্না করা বৈধ।
৩/ তিন দিন পর্যন্ত শোক পালন করা বৈধ, এর বেশি শোক পালন জায়েজ নেই।তবে স্ত্রী তার মৃত স্বামীর জন্য ৪ মাস ১০ দিন শোক পালন করবে।
আত্নীয়স্বজনদের জন্য যা ওয়াজিবঃ
১। আল্লাহর নির্ধারিত তাক্বদীর ও বিধানে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে ধৈর্য ধারন করা।
২। এই বিপদের সময়( মৃত্যু জানতে পেরে বা খবর শুনে এবং তার পরেও) বলা ওয়াজিব-انَّا لله وَ إنَّا إلَيْهِ رَاجِعُوْن
আত্নীয়স্বজনদের জন্য হারামঃ
১/ মাতম করা, উচ্চরোলে কান্না করা,গাল নোচা, কাপড় ছেড়া, চুল ছেড়া, বুকে থাপড়ানো,ইনিয়ে বিনিয়ে রোদন করা,মাইয়্যিতের অতিরিক্ত প্রশংসা করা, যেমন বলা ‘ও আমার সাত রাজার ধন’ ইত্যাদি বলে হা হুতাশ করা, তাকদীরে গালি দিয়ে আল্লাহর প্রতি অবিচারের অভিযোগ করে কান্না করা,মাটি মাখা,মাথায় মারা,কপাল ঠোকা ইত্যাদি হারাম।এগুলো জাহেলী কু-প্রথা।
২/ শোকে ভেঙ্গে মাথা নেড়া করে ফেলা হারাম। আর এমন ব্যক্তি থেকে রাসুলুল্লাহ সাঃ সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলেছেন।
৩/ শোক পালন হিসেবে মহিলাদের মাথার চুল না বাধা।
৪/ শোকে বিমর্ষ হয়ে কয়েকদিনের জন্য দাড়ী বাড়ানো যদিও এর পূর্বে সে ছেটে রাখতো।
৫/ শোক পালনের জন্য কালো পোশাক পড়া বা বিশেষ কোন রঙের পোষাক পড়া।
**মাইয়্যিতের রুহ বাহিরে বেরিয়ে আসার সাথে সাথে জরুরী মনে করে কিছু সাদাকাহ করা বিদ’আত।
**যে স্থানে মারা গেছে সেখানে কয়েকদিন আত্না ঘোরাফেরা করে এমন ধারণা ভ্রান্ত।
সেই স্থানে ধুপ জালানো বা কয়েকদিন পর ইমাম দিয়ে মিলাদ পরে সেই আত্না তাড়ানো বিদ’আত।
**জান কবযের পর বাড়ির পানি, রান্না করা খাবার ফেলে দেয়া, আয়না ঢেকে রাখা বিদ’আত।
**ঋতুবতী মাহরাম মহিলাদের মাইয়্যিতরে পাশে ঘেষতে না দেয়া,দেখতে না দেয়া,স্পর্শ করতে না দেয়া, গোসল দিতে না দেয়া, ইত্যাদি মর্মে শরীয়তে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
**মৃত ব্যক্তির জন্য ইসালে সওয়াবের আশায় কুর’আন পড়া,খতম বৈধ।সেটা আত্নীয়স্বজন,সন্তান সন্ততি করতে পারে। যদি এমন কেউ না থাকে তবে হাফিয এনেও পড়ানো, কুরান খতম জায়েজ হবে। তবে চুক্তিভিত্তিক ভাবে হাফিয এনে কুর’আন খতম বৈধ নয়। নিজেরা খুশি হয়ে হাদিয়া দেয়া ভিন্ন কথা। তবে টাকা বা অন্য কিছুর বিনিময়ে চুক্তি ভিত্তিক হাফিয এনে কুর’আন খতম কখনো বৈধ না।
**ইসালে সওয়াব এর আশায় মৃত ব্যাক্তির জন্য কালিমা পড়াও বৈধ তবে নির্দিষ্ট সংখ্যা ঠিক করে তার ফযিলত নির্ধারণ করা বিদ’আত।
**মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর ৭ দিন বা ৪০ দিন বা বার্ষিক ভাবে দিন নির্ধারন করে কুলখানী করা বৈধ নয়।
মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে ওয়ারিছদের জন্য করণীয় আমলঃ
কুরআনও সুন্নাহর আলোকে মৃত মা-বাবার জন্য কী ধরনের আমল করা যাবে এবং যে আমলের সওয়াব তাদের নিকট পৌছবে তা উল্লেখ করা হলো:
১. বেশী বেশী দু‘আ করাঃ
আল-কুরআনেএসেছে,
رَبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا
‘‘হে আমার রব, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমন তারা আমাকে শৈশব কালে লালন-পালন করেছেন’’ (সূরা বানী ইসরাঈলঃ২৪)
رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ يَوۡمَ يَقُومُ ٱلۡحِسَابُ ٤١﴾ [ابراهيم: ٤١]
‘‘হে আমাদের রব, রোজ কিয়ামতে আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সকল মুমিনকে ক্ষমা করে দিন’’ (সুরাইবরাহীমঃ৪১)
এছাড়া আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পিতা-মাতার জন্য দূ‘আ করার বিশেষ নিয়ম শিক্ষা দিতে গিয়ে বলেনঃ
رَّبِّ ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيۡتِيَ مُؤۡمِنٗا وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۖ وَلَا تَزِدِ ٱلظَّٰلِمِينَ إِلَّا تَبَارَۢا ٢٨ ﴾ [نوح: ٢٨
‘হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করুন এবং ধ্বংস ছাড়া আপনি যালিমদের আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না। (সূরা নুহ: ২৮)
মা-বাবা এমন সন্তান রেখে যাবেন যারা তাদের জন্য দোয়া করবে।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মানুষ মৃত্যু বরণ করলে তার যাবতীয় আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে ৩টি আমল বন্ধ হয়না-
ক. সদকায়ে জারিয়া
খ. এমন জ্ঞান-যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় তথা কুরআর-হাদীসের ইলম।
গ. এমন নেক সন্তান- যে তার জন্য দু‘আ করে’।(সহিহ মুসলিম: ৪৩১০)
২. দান-সাদকাহ করা, বিশেষ করে সাদাকায়ে জারিয়াহ প্রদান করাঃ
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেনঃ
عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَجُلًا أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنَّ أُمِّيَ افْتُلِتَتْ نَفْسَهَا وَلَمْ تُوصِ، وَأَظُنُّهَا لَوْ تَكَلَّمَتْ تَصَدَّقَتْ، أَفَلَهَا أَجْرٌ، إِنْ تَصَدَّقْتُ عَنْهَا؟ قَالَ: «نَعَمْ»
‘‘জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল আমার মা হঠাৎ মৃত্যু বরণ করেছেন।তাই কোন অসিয়ত করতে পারেননি। আমার ধারণা তিনি যদি কথা বলার সুযোগ পেতেন তাহলে দান-সাদকা করতেন ।আমি তাঁর পক্ষ থেকে সাদকা করলে তিনি কি এর সাওয়াব পাবেন? রাসূলুল্লাহ সা. বললেন হ্যাঁ, অবশ্যই পাবেন।’’ (সহীহ মুসলিম: 1004)
ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদীসেরর ব্যখ্যায় বলেনঃ
” ﺍﻟﺼﺪﻗﺔ ﺍﻟﺠﺎﺭﻳﺔ ﻫﻲ ﺍﻟﻮﻗﻒ ” ﺍﻧﺘﻬﻰ .
অর্থ্যাৎ- সদকায়ে জারিয়া দ্বারা উদ্দেশ্য হল ওয়াকফ।(আল-মিনহাজ্ব-১১/৮৫)
খতীব শারবিনী রাহ বলেন
” ﺍﻟﺼﺪﻗﺔ ﺍﻟﺠﺎﺭﻳﺔ ﻣﺤﻤﻮﻟﺔ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻮﻗﻒ ﻛﻤﺎ ﻗﺎﻟﻪ ﺍﻟﺮﺍﻓﻌﻲ ، ﻓﺈﻥ ﻏﻴﺮﻩ ﻣﻦ ﺍﻟﺼﺪﻗﺎﺕ ﻟﻴﺴﺖ ﺟﺎﺭﻳﺔ .
উলামায়ে কেরামদের নিকট সদকায়ে জারিয়া দ্বারা ওয়াকফ-ই উদ্দেশ্য,যেমনটা ইমাম রাফেয়ী বলেছেন।এবং অন্যান্য সদকা জারিয়া নয়।(মুগনিল-মুহতাজ-৩/৫২২)
৩. মা-বাবার পক্ষ থেকে সিয়াম পালনঃ
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেনঃ ‘‘যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করল এমতাবস্থায় যে তার উপর রোজা ওয়াজিব ছিল।তবে তার পক্ষ থেকে তার ওয়ারিসগণ রোজা রাখবে’’ (সহীহ বুখারী: ১৯৫২)
পরস্পর পরস্পরের পক্ষ্য থেকে ইবাদত করা কি যথেষ্ট হবে? এ নিয়ে উলামাদের মধ্যে শক্ত মতবেদ রয়েছে।ইবাদত দুই প্রকারঃ- (১)ইবাদতে বদনি(শারিরিক ইবাদত।(২)ইবাদতে মালি(মাল খরচের মাধ্যমে ইবাদত)।
একজন অন্যজনের পক্ষ্য থেকে ইবাদত করতে পারবেন কি না?
এ সম্পর্কে বলা যায় যে, নফল ইবাদত যে কেউ অন্যর পক্ষ্য থেকে করতে পারবে-যাকে পরিভাষায় ই’সালে সওয়াব বলা হয়- জীবিত বা মৃত যে কারো জন্য ইবাদত করা যায়,চায় ইবাদতে বদনি হোক বা ইবাদতে মালি হোক।
তবে ফরয ইবাদতের বেলায় হুকুম কিছুটা ব্যাখ্যা সাপেক্ষ্য।
ফরয ইবাদত যদি বদনি হয়,তাহলে সে ইবাদত-কে একে অন্যর পক্ষ্য থেকে আঞ্জাম দেয়া যাবে না।কিন্তু যদি সে ইবাদত মালি হয়,বা বদনি ও মালির সংমিশ্রণে হয়,তাহলে সে ইবাদতকে একে অন্যর পক্ষ্য থেকে আদায় করা যাবে।
যেমন নিম্নের হাদীস সমূহে বর্ণিত রয়েছে,
মিশকাতুল মাসাবিহ কিতাবে, সিহাহ সিত্তাহর উদ্ধৃতিতে এ সম্পর্কে কিছু হাদীস বর্ণিত রয়েছে।
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ قَالَ: «إِنَّ امْرَأَةً مِنْ خَثْعَمَ قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ فَرِيضَةَ اللَّهِ عَلَى عِبَادِهِ فِي الْحَجِّ أَدْرَكَتْ أَبِي شَيْخًا كَبِيرًا لَا يَثْبُتُ عَلَى الرَّاحِلَةِ أَفَأَحُجُّ عَنْهُ قَالَ نَعَمْ، وَذَلِكَ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ» (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
খাছ’আম গোত্রের এক মহিলা বলল,ইয়া রাসূলুল্লাহ! আল্লাহর তরফ থেকে বান্দার উপর হজ্ব করা ফরয করা হয়েছে।আমার পিতা বার্ধক্যর কারণে সওয়ারীর উপর আরোহন করতে পারেন না।এখন আমি কি আমার পিতার পক্ষ্য থেকে হজ্ব আদায় করতে পারবো?।রাসূলুল্লাহ সাঃ উত্তরে বললেন,হ্যা আদায় করতে পারবে। এ ঘটনা বিদায় হজ্বে সংঘটিত হয়েছিলো।(মিশকাত-২৫১১,সহীহ বোখারী ও মুসলিম)
(হজ্ব ইবাদতে বদনি ও ইবাদতে মালির সংমিশ্রণে হয়ে থাকে,বিধায় এ ফরয আমল একে অন্যর পক্ষ্য থেকে আদায় করা যাবে।)
ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – قَالَ: ” «مَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ صِيَامُ شَهْرِ رَمَضَانَ فَلْيُطْعَمْ عَنْهُ مَكَانَ كُلِّ يَوْمٍ مِسْكِينٌ» ” رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: وَالصَّحِيحُ أَنَّهُ مَوْقُوفٌ عَلَى ابْنِ عُمَرَ.
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি মারা গেল,এমতাবস্থায় যে তার উপর রোযা ফরয রয়েছে।তাহলে তার পক্ষ্য থেকে প্রতি একটি রোযার বিনিময়ে যেন একজন মিসকিনকে খাদ্য খাওয়ানো হয়।(মিশকাত-২০৩৪)
(সাওম ইবাদতে বদনি।সুতরাং এ ইবাদত একে অন্যর পক্ষ্য থেকে আদায় করা যাবে না মর্মে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।)
ইমাম মালিক উনার সূত্রে হাদীস বর্ণনা করে বলেন,
عَنْ مَالِكٍ بَلَغَهُ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ كَانَ يُسْأَلُ: هَلْ يَصُومُ أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ؟ أَوْ يُصَلِّي أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ؟ فَيَقُولُ: لَا يَصُومُ أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ، وَلَا يُصَلِّي أَحَدٌ عَنْ أَحَدٍ، رَوَاهُ فِي الْمُوَطَّأِ.
হযরত ইবনে উমরকে জিজ্ঞাসা করা হল,কেউ কি অন্য কারো পক্ষ্য থেকে নামায-রোযা করতে পারবে?ইবনে উমর প্রতিউত্তরে বললেন,কেউ অন্য কারো পক্ষ্য থেকে নামায-রোযা করতে পারবে না।(মুয়াত্তা মালিক)(মিশকাত-২০৩৫)
(নামায-রোযা ইবাদতে বদনি।সুতরাং এ ইবাদতকে অকে অন্য পক্ষ্য থেকে আদায় না হওয়ার কথা উক্ত হাদীসে বলা হয়েছে।)
হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: ” «مَنْ مَاتَ وَعَلَيْهِ صَوْمٌ صَامَ عَنْهُ وَلِيُّهُ» ” مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ.
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি মারা যায়,এবং তার উপর অনাদায়ী রোযা থাকে,তাহলে তার পক্ষ্য থেকে যেন তার ওয়ালি/ওয়ারিছরা সেই রোযাকে আদায় করে নেয়।
(মিশকাত-২০৩৩)
(উক্ত হাদীসে ব্যখ্যায় মিরকাতে বর্ণিত রয়েছে,
صَامَ ” أَيْ: كَفَّرَ ” عَنْهُ وَلِيُّهُ ” قَالَ الطِّيبِيُّ: تَأْوِيلُ الْحَدِيثِ أَنَّهُ يَتَدَارَكُ ذَلِكَ وَلِيُّهُ بِالْإِطْعَامِ فَكَأَنَّهُ صَامَ،
এখানে ওয়ালী কর্তৃক রোযা রাখার অর্থ হলো,কাফফারা আদায় করার মাধ্যমে রোযার ক্ষতিপূরণ দেয়া।ইমাম তিবী রাহ বলেন,হাদীসের ব্যাখ্যা হলো,ওয়ালী উক্ত মৃত ব্যক্তির পক্ষ্য থেকে প্রত্যেক রোযার পরিবর্তে মিসকিন খাওয়াবে।এই মিসকিন খাওয়ানোই হল ওয়ালি কর্তৃক রোযা রাখার ব্যাখ্যা।) সূত্র-www.ifatwa.info/1638
৪. হজ্জ বা উমরাহ করাঃ
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকেব বর্ণিত,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، أَنَّ امْرَأَةً مِنْ جُهَيْنَةَ، جَاءَتْ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: إِنَّ أُمِّي نَذَرَتْ أَنْ تَحُجَّ فَلَمْ تَحُجَّ حَتَّى مَاتَتْ، أَفَأَحُجُّ عَنْهَا؟ قَالَ: «نَعَمْ حُجِّي عَنْهَا، أَرَأَيْتِ لَوْ كَانَ عَلَى أُمِّكِ دَيْنٌ أَكُنْتِ قَاضِيَةً؟ اقْضُوا اللَّهَ فَاللَّهُ أَحَقُّ بِالوَفَاءِ»
জুহাইনা গোত্রের একজন মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আগমণ করে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমার মা হজ্জ করার মানত করেছিলেন কিন্তু তিনি হজ্জ সম্পাদন না করেই মারা গেছেন।এখন আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্জ আদায় করতে পারি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তুমি তোমার মায়ের পক্ষ থেকে হজ্জ কর।তোমার কি ধারণা যদি তোমার মার উপর ঋণ থাকতো তবে কি তুমি তা পরিশোধ করতে না? সুতরাং আল্লাহর জন্য তা আদায় কর।কেননা আল্লাহর দাবী পরিশোধ করার অধিক উপযোগী’’ (সহীহ বুখারী: ১৮৫২)
তবে মা-বাবার পক্ষ থেকে যে লোক হজ্জ বা ওমরাহ করতে চায় তার জন্য শর্ত হলো সে আগে নিজের হজ্জ করে নিবে।
৫. মা-বাবার পক্ষ থেকে কুরবানীঃ
কুরবানি যেহেতু ইবাদতে মালি,তাই মাতাপিতার ওয়াজিব কুরবানি থাকলে সেটাও আদায় করা যায়,এবং তাদের পক্ষ থেকে নফল কুরবানিও করা যাবে।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. এমন একটি শিংযুক্ত দুম্বা উপস্থিত করতে নির্দেশ দিলেন, যার পা কালো, চোখের চতুর্দিক কালো এবং পেট কালো। অতঃপর তাকুরবানীর জন্য আনা হলো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা কে বললেন, হে আয়েশা! ছুরি নিয়ে আস, তারপর বললেন, তুমি একটি পাথর নিয়ে তাদ্বারা এটাকে ধারালো কর।তিনি তাই করলেন। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছুরি হাতে নিয়ে দুম্বাটিকে শুইয়ে দিলেন।পশুটি যবেহ করার সময় বললেন, বিসমিল্লাহ, হে আল্লাহ তুমি এটি মুহাম্মাদ, তাঁর বংশধর এবং সকল উম্মাতে মুহাম্মাদীর পক্ষ থেকে কবুল কর”। এভাবে তিনি তাদ্বারা কুরবানী করলেন।(সহীহ মুসলিম: ৫২০৩,সুনানু ইবনে মাজা-৩১২২)
৬. মা-বাবার অসিয়ত পূর্ণ করাঃ
عَنِ الشَّرِيدِ بْنِ سُوَيْدٍ الثَّقَفِيِّ قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أُمِّي أَوْصَتْ أَنْ نُعْتِقُ عَنْهَا رَقَبَةً وَعِنْدِي جَارِيَةٌ سَوْدَاءُ قَالَ: “ادْعُ بِهَا” فَجَاءَتْ فَقَالَ: “مَنْ رَبُّكِ؟ ” قَالَتِ: اللَّهُ قَالَ: “مَنْ أَنَا؟ ” قَالَتْ: رَسُولُ اللَّهِ قال: “أعتقها فإنها مؤمنة”
শারীদ ইবন সুয়াইদ আস-সাকাফী রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা. কে বললাম হে আল্লাহর রাসুল, আমার মা একজন দাস মুক্ত করার জন্য অসিয়ত করে গেছেন।আর আমার নিকট কালো একজন দাসী আছে।রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, তাকে ডাকো, সে আসলো, রাসূলুল্লাহ সা. তাকে প্রশ্ন করলেন, তোমার রব কে? উত্তরে সে বলল, আমার রব আল্লাহ।আবার প্রশ্নকরলেন আমি কে? উত্তরে সে বলল, আপনি আল্লাহর রাসুল।তখন রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, তাকে মুক্ত করে দাও; কেননা সে মু’মিনা।(সহীহ ইবন হিব্বানঃ১৮৯)
৭. মা-বাবার বন্ধুদের সম্মান করাঃ
আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার রা. আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণনা করেন, একবার মক্কার পথে চলার সময় আব্দুল্লাহ রা. এর এক বেদুঈন এর সাথে দেখা হলে তিনি তাকে সালাম দিলেন এবং তাকে সে গাধায় চড়ালেন, যে গাধায় আব্দুল্লাহ রা. উপবিষ্ট ছিলেন এবং তাঁর (আব্দুল্লাহ) মাথায় যে পাগড়িটি পড়াছিলো তা তাকে প্রদান করলেন।আব্দুল্লাহ ইবান দীনার রা হে মাহুল্লাহ বললেন, তখন আমরা আব্দুল্লাহ কে বললাম: আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুক! এরা গ্রাম্য মানুষ: সামান্য কিছু পেলেই এরা সন্তুষ্ট হয়ে যায়-(এতসব করার কি প্রয়োজন ছিলো?) উত্তরে আব্দুল্লাহ রা. বললেন, তার পিতা, (আমার পিতা) উমার ইবনে খাত্তাব রা. এর বন্ধু ছিলেন।আমি রাসূলুল্লাহ সা.কে বলতে শুনেছি “পুত্রের জন্য পিতারবন্ধু-বান্ধবেরসাথে ভাল ব্যবহার করা সবচেয়ে বড় সওয়াবের কাজ’’ (সহীহ মুসলিম:৬৬৭৭)
৮. মা-বাবার আত্নীয়দের সাথে সু-সম্পর্ক রাখাঃ
হযরত আবু-বুরদাহ রায়ি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَبِي بُرْدَةَ قَالَ قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ فَأَتَانِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ فقَالَ أَتَدْرِي لِمَ أَتَيْتُكَ قَالَ قُلْتُ لَا قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ “مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَصِلَ أَبَاهُ فِي قَبْرِهِ فَلْيَصِلْ إِخْوَانَ أَبِيهِ بَعْدَهُ” وَإِنَّهُ كَانَ بَيْنَ أَبِي عُمَرَ وَبَيْنَ أَبِيكَ إِخَاءٌ وَوُدٌّ فَأَحْبَبْتُ أَنْ أَصِلَ ذاك”
তিনি বলেন,আমি মদিনায় আসলাম,আমার নিকট আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি আসলেন,এসে বললেন,আপনি জানেন কি কেন আপনার নিকট আসলাম? আমি বললাম না। তখন আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি বললেন,আমি রাসূলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার পিতার সাথে কবরে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে ভালবাসে, সে যেন পিতার মৃত্যুর পর তার ভাইদের সাথে সু-সম্পর্ক রাখে’ আমার পিতা উমর এবং আপনার মধ্যে আত্মীয়তা ও বন্ধুত্বর সম্পর্ক ছিলো।তাই আমি পছন্দ করলাম যে, আপনার সাথে মিলিত হই।(সহীহ ইবন হিববান: ৪৩২)
৯. ঋণ পরিশোধ করাঃ
মা-বাবার কোন ঋণ থাকলে তা দ্রুত পরিশোধ করার প্রতি সন্তানদের বিশেষ মনযোগ প্রদাণ।তাদের সম্পত্তি থেকে,তাদের সম্পত্তি না থাকলে নিজ সম্পত্তি থেকে। রাসূলুল্লাহ সা. ঋণের পরিশোধ করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «نَفْسُ الْمُؤْمِنِ مُعَلَّقَةٌ بِدَيْنِهِ حَتَّى يُقْضَى عَنْهُ»
রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘‘মুমিন ব্যক্তির আত্মা ঋণের সাথে সম্পৃক্ত থেকে যায়; যতক্ষণ না তা তার পক্ষ থেকে পরিশোধ করা হবে”। (সুনান ইবন মাজাহ: ২৪১৩)
১০. কাফফারা আদায় করাঃ
মা-বাবার কোন শপথের কাফফারা, ভুলকৃত হত্যা সহ কোন কাফফারা থাকলে সন্তান তা পূরণ করবে।আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি কসম খেয়ে শপথ করার পর তার থেকে উত্তম কিছু করলেও তার কাফফারা অদায় করবে’’ (সহিহ মুসলিম: ৪৩৬০)
এ বিধান জীবিত ও মৃত সবার ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য। দুনিয়ার বুকে কেউ অন্যায় করলে তার কাফফারা দিতে হবে। অনুরূপভাবে কেউ অন্যায় করে মারা গেলে তার পরিবার-পরিজন মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কাফফারা আদায় করবেন।
১১. ক্ষমা প্রার্থনা করাঃ
মা-বাবার জন্য আল্লাহর নিকট বেশীবেশী ক্ষমা প্রার্থনা করা গুরুত্বপূর্ণ আমল। সন্তান মা-বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করায় আল্লাহ তা‘আলা তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: تُرْفَعُ لِلْمَيِّتِ بَعْدَ مَوْتِهِ دَرَجَتُهُ. فَيَقُولُ: أَيْ رَبِّ، أَيُّ شَيْءٍ هَذِهِ؟ فَيُقَالُ: وَلَدُكَ اسْتَغْفَرَ لَكَ “
তিনি বলেন, মৃত্যুর পর কোন বান্দাহর মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়।তখন সে বলে হে আমার রব, আমিতো এতো মর্যাদার আমল করিনি, কিভাবে এ আমল আসলো? তখন বলা হবে, তোমার সন্তান তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করায় এ মর্যাদা তুমি পেয়েছো’’ (আল-আদাবুল-মুফরাদ-৩৬)
১২. মান্নত পূরণ করাঃ
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ سَعْدَ بْنَ عُبَادَةَ اسْتَفْتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ وَعَلَيْهَا نَذَرٌ لَمْ تَقْضِهِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: “اقضه عنها”
সা’দ ইবনে উবাদা রাযি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন,আমার মা মারা গেছেন,উনার উপর একটা মান্নত আছে যা তিনি পূর্ণ করেননি।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,তুমি পূর্ণ করো। (সহীহ ইবন হিব্বান:৪৩৯৩)
১৩. মা-বাবার ভালকাজ সমূহ জারী রাখাঃ
মা-বাবা যেসব ভাল কাজ অর্থাৎ মসজিদ তৈরী করা, মাদরাসা তৈরী করা, দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরী সহ, কাউকে মাসিক বা বছরে নির্দিষ্ট দান করে যেতেন, এই ধরনের কাজগুলো সন্তান হিসাবে তা যাতে অব্যাহত থাকে তার ব্যবস্থা করা।কেননা এসব ভাল কাজের সওয়াব তাদের আমলনামায় যুক্ত হতে থাকে।যে ব্যক্তির ইসলামের ভালকাজ শুরু করল, সে একাজ সম্পাদনকারীর অনুরূপ সাওয়াব পাবে।অথচ তাদের সওয়াব থেকে কোন কমতি হবেনা’’ (সহীহ মুসলিম:২৩৯৮)
১৪. কবর যিয়ারত করাঃ
সন্তান তার মা-বাবার কবর যিয়ারত করবে।এর মাধ্যমে সন্তান এবং মা-বাবা উভয়ই উপকৃত হবে।
عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «قَدْ كُنْتُ نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ القُبُورِ، فَقَدْ أُذِنَ لِمُحَمَّدٍ فِي زِيَارَةِ قَبْرِ أُمِّهِ، فَزُورُوهَا فَإِنَّهَا تُذَكِّرُ الآخِرَةَ»
রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। অত:পর মুহাম্মাদ সাঃ মায়ের কবর যিয়ারতের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এখন তোমরা কবর যিয়রাত কর, কেননা তা আখেরাত কে স্মরণ করিয়ে দেয়। (সুনান তিরমীযি :১০৫৪) দিনতারিখ নির্দিষ্ট করে কবর যিয়ারত করা যাবে না।
১৫. ওয়াদা করে গেলে তা বাস্তবায়ন করাঃ
মা-বাবা কারো সাথে কোন ভালকাজের ওয়াদা করে গেলে বা এমন ওয়াদা যা তারা বেঁচে থাকলে করে যেতেন, সন্তান যথা সম্ভব তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবে।কেননা আল্লাহ তা’আলা বলেন, তোমরা অঙ্গীকার পূর্ণ কর, নিশ্চয় অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।(সূরা বনী-ইসরাঈল:৩৪)
১৬. কোন গুনাহের কাজ করে গেলে তা বন্ধ করাঃ
মা-বাবা বেচে থাকতে কোন গুনাহের কাজের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে তা বন্ধ করবে বা শরীয়াহ সম্মতভাবে সংশোধন করে দিবে।রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, এবং যে মানুষকে গুনাহের দিকে আহবান করবে, একাজ সম্পাদনকারীর অনুরূপ গুনাহ তার আমলনামায় যুক্ত হতে থাকবে। অথচ তাদের গুনাহ থেকে কোন কমতি হবেনা’’ (সহিহ-মুসলিম:৬৯৮০)
১৭. মা-বাবার পক্ষ থেকে মাফ চাওয়াঃ
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَتَدْرُونَ مَنِ الْمُفْلِسُ»؟ قَالُوا: المُفْلِسُ فِينَا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ لَا دِرْهَمَ لَهُ وَلَا مَتَاعَ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «المُفْلِسُ مِنْ أُمَّتِي مَنْ يَأْتِي يَوْمَ القِيَامَةِ بِصَلَاتِهِ وَصِيَامِهِ وَزَكَاتِهِ، وَيَأْتِي قَدْ شَتَمَ هَذَا وَقَذَفَ هَذَا، وَأَكَلَ مَالَ هَذَا، وَسَفَكَ دَمَ هَذَا، وَضَرَبَ هَذَا فَيَقْعُدُ فَيَقْتَصُّ هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ، وَهَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ، فَإِنْ فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ أَنْ يُقْتَصّ مَا عَلَيْهِ مِنَ الخَطَايَا أُخِذَ مِنْ خَطَايَاهُمْ فَطُرِحَ عَلَيْهِ ثُمَّ طُرِحَ فِي النَّارِ»
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা কি জান নিঃস্ব ব্যক্তি কে? সাহাবীগণ বললেন, আমাদের মধ্যে যার সম্পদ নাই সে হলো গরীব লোক।তখন তিনি বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে সে হলো গরীব যে, কিয়ামতের দিন নামায, রোযা ও যাকাত নিয়ে আসবে অথচ সে অমুককে গালি দিয়েছে, অমুককে অপবাদ দিয়েছে, অন্যায়ভাবে লোকের মাল খেয়েছে, সে লোকের রক্ত প্রবাহিত করেছে এবং কাউকে প্রহার করেছে।কাজেই এসব নির্যাতিত ব্যক্তিদেরকে সেদিন তার নেক আমল নামা দিয়ে দেয়া হবে।এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (সুনান আত-তিরমিজি :২৪১৮)
সুতরাং এধরনের নিঃস্বব্যক্তিকে মুক্ত করার জন্য তার হকদারদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেয়া সন্তানের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে মা বাবার জন্য আমলগুলো করার তাওফীক দিন।আমীন।
*যে কোন মুসলিম মৃত ব্যক্তি কেবল ঐ সকল জিনিস দ্বারাই উপকার লাভ করতে পারে যে গুলো কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা নির্ধারিত। যেমন:
১। রাসূল স. বলেনঃ
“মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার আমলের সমস্ত পথ বন্ধ হয়ে যায় তিনটি ব্যতীতঃ সদকায়ে জারিয়া,এমন ইলম যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় এবং এমন নেককার সন্তান যে তার জন্য দু’আ করে”। (মুসলিম:৩০৮৪)
২। আনাস রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. ইরশাদ করেনঃ
“সাত প্রকার কাজের সওয়াব মারা যাওয়ার পরও বান্দার কবরে পৌঁছতে থাকে। যে ব্যক্তি দ্বীনী ইলম শিক্ষা দেয়, নদী-নালায় পানি প্রবাহের ব্যবস্থা করে, কুপ খনন করে, খেজুর গাছ রোপন করে, মসজিদ তৈরী করে, কুরআনের উত্তরাধিকারী রেখে যায় অথবা এমন সু-সন্তান রেখে যায় যে তার মারা যাওয়ার পরও তার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমার জন্য দুয়া করে থাকে।(আল্লামা আলবানী (রাহ:) কর্তৃক রচিত সহীহুত-তারগীব ওয়াত-তারহীব:৭৩)
দ্বীনী ইলম শিক্ষা দেয়া
নদী-নালায় পানি প্রবাহের ব্যবস্থা করা,
কুপ খনন করা,
ফলবানগাছ রোপন করা,
মসজিদ তৈরী করা,
কুরআনের উত্তরাধিকারী রেখে যাওয়া অথবা
এমন সুসন্তান রেখে যাওয়া যে তার মারা যাওয়ার পরও তার জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমার জন্য দু’আ করে।
৩) নবী সা. বলেনঃ
“যে ব্যক্তি ইসলামে কোন সুন্নত চালু করল সে ব্যক্তি এই সুন্নাত চালু করার বিনিময়ে সওয়াব পাবে এবং তার মারা যাওয়ার পর যত মানুষ উক্ত সুন্নাতের উপর আমল করবে তাদেরও সওয়াব সে পেতে থাকবে।অথচ যারা আমল করবে তাদের সওয়াব কিছুই হ্রাস করা হবেনা।”সহীহ মুসলিম: ১০১৭
মৃত ব্যক্তি যদি তার জীবদ্দশায় কোন পরিত্যক্ত সুন্নতকে আমলের মাধ্যমে পূণর্জীবিত করে এবং তার মৃত্যুর পরেও উক্ত আমল চালু থাকে।
৪) মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোন দান-সদকা করা হলে মৃতব্যক্তি তার সওয়াব লাভ করে।
সহীহ মুসলিমে বর্ণিত রয়েছে, এক ব্যক্তি নবী সা. কে বললেন,আমার পিতা-মাতা অর্থ-সম্পদ রেখে মারা গেছেন। এ ব্যাপারে তারা আমাকে কোন ওসিয়ত করে যাননি।এখন আমি তাদের উদ্দেশ্যে দান-সদকা করলে তা তাদের জন্যে কি যথেষ্ট হবে? তিনি সা. বললেন,“হ্যাঁ”।
৫)জীবিত মুসলিমগণ মৃত মানুষের জন্য দু’আ ও ইস্তেগফার করলে তাদের নিকট এর সওয়াব পৌঁছে।
কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
“যারা তাদের পরবর্তীতে আগমণ করেছে (অর্থাৎ পরে ইসলাম গ্রহণ করেছে) তারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক, আমাদেরকে এবং আমাদের পূর্বে যে সকল ঈমানদার ভাই অতিবাহিত হয়ে গেছেন তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং মুমিনদের ব্যাপারে আমাদের অন্তরে হিংসা-বিদ্বেষ বদ্ধমূল রেখো না। হে আমাদের প্রতিপালক, আপনি তো পরমদয়ালু, অতি মেহেরবান।” (সূরা-হাশর: ১০)
উপকারী এবং স্থায়ী দান কয়েক প্রকার: (বিভিন্ন প্রকার সদকায়ে জারিয়ার উদাহরন)
১) পানির ব্যবস্থা করা ।(বিশুদ্ধ পানির জন্য ফিল্টার দিতে পারেন)
২) এতিমের/ বিধবার প্রতিপালনের দায়িত্ব গ্রহণ করা।
৩) অসহায় মানুষের বাসস্থান/কর্মসংস্থান তৈরি করা।
৪) গরীব তালিবে ইলমকে সাহায্য-সহযোগিতা করা।কুর’আনের হাফেজ হতে সহায়তা করা।
৫) দাতব্য চিকিৎসালয় বা হাসপাতাল নির্মান, একটি হুইলচেয়ার বা বেড বা চেয়ার দান করা।
৬) মসজিদ নির্মান, মসজিদে ফ্যান,বই, ইত্যাদি হাদিয়া হিসেবে দেয়া।
৭)জ্ঞান অর্জনের জন্য সঠিক বই হাদিয়া দেয়া ।( বেসিক জ্ঞানের জন্য সহিহ ঈমান, সালাত, অজু, গোসল ফরয ওয়াজিব, শিরক বিদয়াত ইত্যাদি)
৮)রক্তদান করা/ চিকিৎসায় সহযোগীতা করা।
৯)ফলদায়ক গাছ লাগানো ( আপনি দূরে কোথাও সফরে যাচ্ছেন, রাস্তার পাশের পড়ে থাকা জমিতে ফলের বীজ ছিটিয়ে দিতে পারেন)
১০)কল্যান মূলক কাজ যা মানুষের মৌ্লিক চাহিদাকে পূর্ণ করে সেটা শরীয়ত মুতাবিক ব্যবস্থা করে দেয়া।
১১)কল্যান মূলক জ্ঞান বিতরন ও পাঠাগার গঠন করে দেয়া ইত্যাদি।
তথ্যসূত্রঃ
১/ আহকামুল জানাইয (অনুবাদ), আল্লামা আলবানী (রহিমাহুল্লাহ)।
৩/ islamqa.info
৪/ askislambd.weebly.com
৫/ sistersforuminislam.com
৬/ জানাযা দর্পণ, আব্দুল হামিদ মাদানী
শারঈ সম্পাদনায়- মুফতি ইমদাদুল হক