আমাদের সমাজে ‘হুজুর’দেরকে কোন দৃষ্টিতে দেখা হয় তা একেবারে Practically বুঝার জন্য আমাদের Pre-Islamic সময়ে আমরা নিজেরা কীভাবে তাদেরকে দেখতাম সেদিকে তাকানোই যথেষ্ট। ব্যাক্তিগতভাবে আমি এটা নিয়ে অনেক চিন্তা করেছি এবং যা দেখেছি তা একইসাথে দুঃখজনক ও লজ্জাকর। সেই ছোটবেলায় (৮-৯ বছর বয়সে) যিনি প্রথম কুরআন শেখাতে এসেছিলেন তিনি থেকে শুরু করে বাসার সামনে মাসজিদের পেশ ইমাম পর্যন্ত এই নেগেটিভ দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। হুজুর মানেই দাঁত লাল (পানের কারণে), ময়লা পাঞ্জাবী, বহুদিনের পুরনো লাল-সাদা চেক রুমাল, মেয়ে দেখলেই ‘কেমন কেমন’ করে তাকান ইত্যাদি ইত্যাদি… এমনকি ছোটবেলায় কোন ইমাম খুৎবার মধ্যে ইংরেজী শব্দ ব্যবহার করলে অবাক হয়ে ভাবতাম- ‘ইনিও ইংরেজী জানেন!’ এই একই ধরণের অভিজ্ঞতা বলছিলেন Tawfique Chowdhury। তিনি ছোটবেলায় বুয়েটের এক ছাত্রের কাছে প্রাইভেট পড়তেন। তো সেই বুয়েটিয়ানকে দামী বার্গার, ড্রিঙ্কস ইত্যাদি দিয়ে বিকালের নাস্তা দেওয়া হত। আর সেই বুয়েটিয়ানের পড়ান যখন প্রায় শেষ তখনই আসত শাইখ তৌফিক এর কুরআন শেখানোর হুজুর। তিনি সবই দেখতেন কিন্তু তাকে নাস্তা দেওয়া হত শুধুই চা-বিস্কুট। ইসলাম প্র্যাক্টিস করতে শুরু করার পর আলহামদুলিল্লাহ আমরা অনেকেই এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বের হতে পেরেছি কিন্তু এখন সমস্যাটা হয়ে গেছে অন্য জায়গায়। International Islamic Conference গুলোর চোখ ধাঁধান আলো ঝলকানি, সুদৃশ্য স্টেজ এ ভারী ভারী ক্যামেরার সামনে আকর্ষণীয় কায়দায় International Speaker দের বক্তব্য ইত্যাদি শুনে শুনে আমরা যে Islamized হয়েছি তা আসলে কতটা ইসলামকে ভালবেসে আর ইসলামের জন্য কাজ করার অনুপ্রেরণা নিয়ে? নাকি একসময়ের Backdated ‘হুজুর’দের রীতি ভেঙ্গে ইসলামকে ‘Smart’ হিসেবে তুলে ধরার ও চোখ ধাঁধান আলো ঝলকানির স্টেজে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্যই কেবল আমাদের এই পরিবর্তন? Mirza Yawar Baig একবার বলছিলেন, বর্তমান সময়ের অধিকাংশ International Islamic Conference গুলো একজনের ইখলাসকে নষ্ট করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ মুসলিম উম্মাহর সকল স্কলার, দা’ঈ ও সাধারণ মুসলিমদের রক্ষা করুন। আমিন।
৮ এপ্রিল, ২০১৪