দু’দিন আগে মেয়েকে শুইয়ে পাসে বসে পড়ছিলাম, হঠাৎ দেখি মেয়ে ডান হাতটা মুখের কাছে নিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করছে। অবাক হয়ে দেখতে লাগলাম, এই কাজটা আগে কখনো করেনি। এটাও যে একটা খাওয়ার বস্তু, এই প্রথম সে আবিষ্কার করলো। অতঃপর যতবারই মুখে নিতে যাচ্ছে, ঠিকমত পারছেনা, নিজের উপর নিজেই বিরক্ত হয়ে কাঁদছে। সেই থেকে দু’দিন ধরে হাত খাওয়ার সংগ্রামই চলছে। কখনো সফল, কখনো বিফল হচ্ছে….
শাশুড়ি মা বললেন, “হাত খেতে দিওনা, বদ অভ্যেস হয়ে যাবে।” আমিতো উল্টো ওর এই সফলতা-ব্যর্থতার প্রথম সংগ্রাম দেখাটাকেই উপভোগ করছি, মাঝে মাঝে সাহায্যও করছি। করুক না প্রচেষ্টা, এভাবেই একসময় জীবন সংগ্রামেও নামতে হবে যে!
প্রতিবার ওর এই হারজিত খেলা দেখছি আর অবাক হচ্ছি: এইতো কদিন আগেই হাত নাড়ানোর ক্ষমতাটুকুও ছিলোনা, আর এখন সেটা মুখে পোরার প্রয়াস! আর কদিন বাদেই হয়তো পা-টাও টেনে এনে মুখে পোরার চেষ্টা করবে। এরপর বসবে, দাঁড়াবে, হাটবে, কথা বলবে…..(ইনশাআল্লাহ)
তাকিয়ে থাকি আর ভাবি: হায়রে মানবশিশু! কতইনা দুর্বল তুই! কি অদ্ভূত এক ক্রমবিবর্তনের পরিক্রমায় বিন্দু থেকে একটু একটু করে পরিপূর্ণ মানবে পরিণত হয়ে যাচ্ছিস তুইই! তারও চেয়ে অদ্ভূত সেই মহান কারিগর, যিনি তোকে সৃষ্টি করেছেন। ফাসুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহ! একদিন সেই রবের কাছেই তোকে ফিরে যেতে হবে…..
هَلْ أَتٰى عَلَى الْإِنسٰنِ حِينٌ مِّنَ الدَّهْرِ لَمْ يَكُن شَيْئًا مَّذْكُورًا. إِنَّا خَلَقْنَا الْإِنسٰنَ مِن نُّطْفَةٍ أَمْشَاجٍ نَّبْتَلِيهِ فَجَعَلْنٰهُ سَمِيعًۢا بَصِيرًا. إِنَّا هَدَيْنٰهُ السَّبِيلَ إِمَّا شَاكِرًا وَإِمَّا كَفُورًا.
“মানুষের উপর কি কালের এমন একটি ক্ষণ আসেনি যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিল না? আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সামান্য শুক্রবিন্দু থেকে, তাকে পরীক্ষা করার জন্য, সেজন্য আমি তাকে করেছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন। নিশ্চয়ই আমরা তাকে প্রদর্শন করেছি পথ, অতঃপর হয় সে বেছে নেয় শোকরগুজারি অথবা অকৃতজ্ঞতা।” [সূরা দাহর: ১-৩]