১।
আমি যখন ক্লাস সেভেনে কি এইটে, এক পরীক্ষায় স্যার আমাদের হলের দুইজনকে দেখাদেখির অপরাধে পাকড়াও করলেন।তারা আমাদের দুই ব্যাচ সিনিয়র ছিল।স্যার তাদেরকে তাদের খাতা নিয়ে আসতে বললেন।খাতা নিয়ে আসার পর দেখা গেল তাদের দুইজনের নামের ঘরেই একই নাম ।দেখাদেখির কাজে এতই ব্যস্ত ছিল যে হয়ত নামের ঘরে কি লিখছে সেটা টের পায় নি।হয়তোবা পুরো চিন্তাশক্তি নকলের কাজে এতবেশি ব্যয় করছিল তাই যথাস্থানে যথা জিনিস প্রয়োগে ব্যর্থ হয়েছিল।
২।
মহানবী সঃ এর আবির্ভাবের পর থেকেই মানুষ ইসলাম নিয়ে নানা রকম অপপ্রচার চালাচ্ছে।এ ক্ষেত্রে ইহুদিরা ছিল সবচেয়ে তৎপর।তারপর সময় যেতে থাকে ইহুদি খ্রিস্টিয়ানরা ইসলামের অপপ্রচারে কিছুই বাদ রাখেনি।এক এক করে ধবংস হয়ে গেছে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা।আস্তে আস্তে মুসলিমদেরকে গলাধঃকরন করিয়েছে সেক্যুলারিজমের গরল।intellectual ফিল্ডে মুসলিমরা আস্তে আস্তে ধরা খেতে থাকল।intelletual leadership তা চলে গেল বস্তুবাদী দুনিয়াপূজারীদের হাতে।আজ বিশ্বে যখন মানবতার কাফেলা দস্যু দ্বারা আক্রান্ত,মানবতা যেখানে মুখ লুকিয়ে কাঁদছে,UN (United Neglector’s)সহ পশ্চিমা বিশ্ব দেখাচ্ছে দুমোখো নীতি,নৈতিকতাকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে মানবতাকে করছে প্রকাশ্যে গনধর্ষন সে সময় বিশ্ব মুখিয়ে আছে এমন একটি আদর্শের দিকে যা মানবতাকে সত্যিকার মুক্তি দিতে পারে।মানুষ পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, প্রচলিত গনতন্ত্র, বস্তুবাদ কোথাও পাচ্ছে না তাদের সত্যিকার মুক্তি,কেউ তাকে দেখাচ্ছে না মুক্তির পথ,কেউ তাদেরকে দিতে পারছে সত্যিকার আলোর দিশা।ঠিক এ সময় ১৫০০ পুরনো একটি আলো মিটিমিটি করে ঝলছে।আপনি যতই সে আলোর দিকে এগিয়ে যাবে ততই আলোর ঔজ্জলতা আপনার চোখে পড়বে।কিন্তু শয়তানের দোসররা আপনাকে সে আলোর দিকে এগিয়ে যেতে বাঁধা দিচ্ছে।আপনাকে দমিয়ে রাখতে চাইছে বিভিন্ন রকমের অপপ্রচারে মাধ্যমে।আমাদের এ দেশসহ পুরো বিশ্বে মুসলিমদের নিয়ে এমন কিছু অপপ্রচার করা হয় যার সাথে আদৌ ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই।তার মধ্য থেকে দুটি বিষয় নিয়ে এখানে আলোচনা করার ইচ্ছা আছে।
ধর্ম ও বিজ্ঞান সাংঘর্ষিক
ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের কোন সম্পর্ক নেই।সে সূত্র ধরে ইসলামের সাথে ও বিজ্ঞানে কোন সম্পর্ক নেই।ধর্ম বিজ্ঞানীদের হত্যা করে।ধর্ম বিজ্ঞানচর্চা বিরোধী।ধর্ম বিজ্ঞান থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।কথাগুলো সত্য তবে সব ধর্মে ক্ষেত্রে নয়।১৫০০ শতাব্দীর দ্বিতীয়াংশে এবং ১৬০০ শতাব্দীতে খ্রিষ্টিয়ানরা বিজ্ঞানীদের কথা বাইবেলের সাথে বিরোধপুর্ন হওয়ার কারনে শাস্তি দেয় গ্যালিলিওকে ,পুড়িয়ে মারে ব্রুনোকে।কিন্তু এ কাজটা তো মুসলিমরা করে নি।ধর্মগ্রন্থের সাথে বিজ্ঞানের সংঘর্ষ হয়েছে এটা সত্য কিন্তু তা তো কোরআনের সাথে হয় নি।ইউরোপ পশ্চিমা বিশ্বে এরকম অবস্থা হয়েছে তাই তারা যদি ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে এ কথা বলে তাহলে মেনে নেয়া যায়।কিন্তু তাদের থেকে শুনে নকল করে যখন আমাদের মবিতীয়াংশও এ কথাগুলো আওড়ায় তখন মনে হয়,আরে পাগলা নকল করবি ভাল কথা একটু বুঝেশুনে কর।আগে দেখে নে এটার সাথে জিনিসটি যায় কিনা?ইসলাম বিজ্ঞান গবেষনায় উৎসাহ দেয়।আল্লাহ কোরানে বলেন-
নিশ্চয় আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে বোধ সম্পন্ন লোকদের জন্যে।সূরা আলে ইমরান-১৯২
আপনি যদি মুসলিমদের প্রাচীন ইতিহাসের দিকে তাকান তাহলে দেখবেন তারা বিজ্ঞান চর্চা করত।এবং সে সময়ের বিজ্ঞানের বইগুলোতে এখনো প্রচুর পরিমান কোরানের উদ্ধৃতি লক্ষ্য করা যায়।
ইসলাম ও রাষ্ট্রভাবনা
বাইবেলে গসপেল অব ম্যাথিউ এর ২২ অধ্যায়ের ২১ নং অনুচ্ছেদে আছে “সিজারের প্রাপ্য সিজারকে দাও ঈশ্বরের প্রাপ্য ঈশ্বরকে দাও”।ধর্ম ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা ভিন্ন জিনিস।ধর্ম মানুষের জন্য ইহজগতের নয় বরং পরজগতের কল্যানের জন্য এসেছে।যীশু খ্রীস্ট বাইবেল অনুযায়ী আরো বলেছেন-
“আমার রাজ্য এ জগতের নয়”যোহন-১৮ঃ৩৬
মূলত এ সকল উদ্ধৃতি থেকেই পশ্চিমাদের মনে এমন চিন্তা চেতনার উদয় হয়েছে ধর্ম শুধু আসমানের উপরের কথা আর জমীনের নিচের কথা বলবে।আর মধ্যবর্তী কিছু বলা ধর্মের কাজ নয়।ধর্ম আপনার সমাজ ব্যাবস্থা নিয়ে কথা বলবে না,অর্থনীতি নিয়ে কথা বলবে না,রাজনীতি নিয়ে কথা বলবে না।ধর্মের আবির্ভাব ব্যক্তির সংস্কারের জন্য।সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের সংস্কার ধর্মের কাজ নয়।পশ্চিমা মগজপ্রসূত এসকল কথাবার্তা আমাদের দেশের স্বল্প চিন্তার ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী বুদ্ধিজীবিরা লুফে নিয়েছে।তারা ইসলামের ক্ষেত্রেও এ সকল জিনিস মুখস্থ প্রয়োগ করতে চাচ্ছে।পশ্চিমাদের ধর্মসম্পর্কে দৃষ্টিভংগী নকল করতে গিয়ে তারা ইসলামের ক্ষেত্রেও এগুলো আওড়াচ্ছে।কিন্তু তারা ভুলে গেছে ইসলাম অন্যান্য ধর্মগুলোর মত নিছক ধর্ম নয় বরং এটি একটি জীবনব্যবস্থা,যার আবির্ভাব মানবতার মুক্তিকল্পে।মানুষ প্রকৃতিকভাবেই দাস মনোবৃত্তি নিয়েই জন্মায়।সে যখন এক স্রষ্টার দাসত্ব করে না,তখন সে হয়ে যায় পীর,শাসক,কৃষ্টিকালচারের দাস।ইসলাম এসেছে সকল রকমের দাসত্ব থেকে মানবতাকে মুক্তি দিয়ে এক আল্লাহর দাসত্বে হাজির করতে।সবক্ষেত্রেই ইসলাম আল্লাহর দাসত্ব শেখায়।অর্থনীতি থেকে শুরু করে,দেওয়ানী ফৌজদারী আইন সবজায়গায় ইসলাম আল্লাহর দাসত্ব ই শেখায়।তাই পশ্চিমাদের থেকে নকল করে যারা কন্ঠ মেলান তাদের প্রতি “আরে পাগলা নকল কর ভাল কথা একটু বুঝেশুনে কর”।