পণ্য বর্জন

ইসরাইলি পণ্য বর্জন ইস্যু নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বহুত বিতণ্ডা পড়ার পর একটা কথা বলার লোভ সামলাতে পারছি না। একটা সময় ছিল যখন চারপাশে ঘটে যাওয়া বড় কোন অপরাধ/অন্যায়ের প্রতিবাদস্বরূপ যখন কেউ আপাত দৃষ্টিতে “হুদাই” কোন কাজ করত তখন ভাবতাম- “এসব করে আর কী অন্যায় বন্ধ হচ্ছে?” যেমন ধরুন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, এখন কয়েকজন মিলে প্রতিবাদ হিসেবে মানব বন্ধন করল। এতে প্রশ্ন ফাঁসকারীদের কী শাস্তি হল? কিছুই না। অনেকে ইসরাইলি পণ্য বর্জন নিয়েও একই কথা বলেন। কেউ কেউ আরও একধাপ এগিয়ে বলেন- এটা করে কি গাযায় বোম্বিং বন্ধ হবে? জ্বীনা। বোম্বিং বন্ধ করার জন্যও কেউ পণ্য বর্জন করতে বলছে না। তাহলে কেন ? একটা গল্প (সত্য ঘটনা) বললে পরিষ্কার হবে।

প্রথম ইরাক যুদ্ধের পর একজন লোক প্রতিদিনই নির্দিষ্ট সময়ে একটা জ্বলন্ত মোমবাতি হাতে হোয়াইট হাউসের সামনে এসে দাঁড়াত। এরপর কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে চলে যেত। তুষারপাত, বৃষ্টি কিংবা ঝড় কোনকিছুই তাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারত না। প্রচণ্ড বৃষ্টির মাঝেও রেইনকোট গায়ে খুব সযত্নে মোমবাতিটাকে আড়াল করে এসে দাঁড়াত সেই একই জায়গায়। একদিন গার্ড এসে তাকে এমন করার কারণ জিজ্ঞেস করে সেই একই কথা বলল- এতে আমেরিকার কী ক্ষতি করতে পারলে তুমি? সে বলল, “আমি এজন্য আসিনা যে আমি আমেরিকাকে পরিবর্তন করতে পারব, কিন্তু আমি এজন্য আসি যে আমেরিকা যেন আমাকে পরিবর্তন করতে না পারে।”

এরপরও যারা বোঝেননি কেন আমরা ইসরাইলি পণ্য বর্জন করতে বলি তাদের জন্য বলি- We do it for who we are, not for what they are. ধন্যবাদ।

১৫ আগস্ট, ২০১৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *