বাচ্চার প্যারেন্ট হলেই কেবল আপনি শিখবেন, লাইফে ডিসিপ্লিন কাকে বলে। মন চাইলেই দুম করে কাত হয়ে পড়তে পারবেন না, ক্লান্তিতে শরীর ভেঙে গেলেও গা এলিয়ে দিতে পারবেন না, ঘুমে চোখ ঢুলুঢুলু হলেও একটু জিরিয়ে নিতে পারবেন না, বাচ্চা না ঘুমোলে মধ্যরাত অবধিও ঘুমোতে পারবেন না, অসুস্থ হলেও সিকবেডে শুয়ে থাকতে পারবেন না, মন চাইলেই মশারি না টাঙিয়ে ঘুমিয়ে যেতে পারবেন না, বাচ্চার সামনে যেকোন বই এমনকি কোরআন খুলে নিয়ে বসাটাও হবে চলমান যুদ্ধ, রাতের বেলায় ডজনখানেক বার বাচ্চার জন্য ঘুম ভাঙলেও আবার সেহরীতে ওঠা ও ফজর মিস না করার প্রস্তুতি নিয়ে ঘুমোতে হবে, সালাতের জন্য এক কাপড় দশবারও বদলানো লাগতে পারে, দিনের মধ্যে দু’চার বার গোসল-আধাগোসল-পৌনে গোসল লাগতে পারে, সক্কালবেলা কাজের যেই মেশিন চালিয়েছেন রাতের বেলায় একদম সব শেষ না করে মেশিন অফ করতে পারবেন না, রাতে সফলভাবে বিছানায় যাওয়ার পর নিজেকে যুদ্ধজয়ী মনে হবে। রুটিন কাকে বলে, কত প্রকার, ভালোমত জেনে ফেলবেন; চরম খেয়ালী মানুষটাও হয়ে যাবেন ‘হালুয়া টাইট’। সন্তান না হলে আপনি বুঝতেই পারতেন না, কি পরিমাণ পটেন্স আপনার ভেতর ছিলো, যা হয়তো অনেকেই অবসর জীবনে হেলায় কাটিয়ে এসেছেন। ‘শরীরের নাম মহাশয়, যাহা সওয়াবেন তাই সয়’ এই কথাও বুঝে আসবে….
এজন্যই বলা হয়ে থাকে, আমরা বাচ্চাদের প্যারেন্টিং করিনা, বরং বাচ্চারাই আমাদের প্যারেন্টিং শেখায়। এরচে সত্য আর নাই।
এবার আশার কথা বলি। সবটাই নেগেটিভ না কিন্তু, এই যে আমরা টাইম ম্যানেজমেন্ট শিখছি বাচ্চা পালতে গিয়ে, বাচ্চা বড় হওয়ার পর একটু অবসর সময় হাতে পেলে কিন্তু এই স্কিলটাই আমরা অন্য কোন বেটার কাজে লাগাতে পারবো, ইনশাআল্লাহ। জানি, অনেকেই বলবেন, বাচ্চার মায়েরা কোনদিন অবসর হয়না, যেই গাড়ি একবার স্টার্ট দেয় তা আর বন্ধ হয়না, গতিপ্রকৃতি বদলায় কেবল। আমি বলবো: তা বটে, তবে আমি কিন্তু এই মুহুর্তেও অবসর কিছু পাচ্ছি, আলহামদুলিল্লাহ। নচেৎ এই মধ্য রাত্তিরে পোস্ট দেয়ার সময় পেলাম কই??