এবারের পহেলা বৈশাখের নারী সংক্রান্ত ঘটনাটা নিয়ে ফেবু জুড়ে তোলপাড়। কেউ বা তথাকথিত নারীবাদের দোহাই দিয়ে বলছে যত্রতত্র নারীদের ইচ্ছেমত পোশাকে যাবার অধিকার আছে, সব দোষ পুলিশের। তারা নাকি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজা নিয়েছে। এই ধরণের কথা নতুন কিছু নয় এবং এসব কথার অসারতাও বহু আগে প্রমাণিত হয়ে গেছে। কিন্তু আমি অবাক হয়েছি কিছু ইসলামিস্তো লেখক এমনভাবে ব্যংগ করেছেন বিষয়টা নিয়ে যেন এই ধরণের লাঞ্চনাই মেয়েগুলির প্রাপ্য ছিল। ভাবখানা এমন যে তারা যেহেতু ইসলামের বিধান লঙ্ঘন করে সেখানে গিয়েছেন সেহেতু তাদের এহেন পরিণতিতে আমাদের খুশি হওয়া উচিত এবং ফতোয়ার তোড়ে তাদেরকে ভাসিয়ে দেওয়া এই মুহূর্তে এহেন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অতি জরূরী।

অথচ আমরা নিজেদেরকে সেই নাবীর উম্মাহ দাবি করি যাঁর কাছে এক সাহাবী এসে ব্যভিচার করার অনুমতি চেয়েছিল। তিনি কি তাকে কোন ফতোয়া দিয়েছিলেন ? নাকি গালাগালি করে মজা নিয়েছিলেন আর নাকি তার অজ্ঞতার জন্য “তোর জন্য এটাই ঠিক” টাইপের কথা বলেছিলেন ? তিনি কোনটাই না করে বরং জিজ্ঞেস করেছিলেন যে তার মা,বোন, মেয়ের সাথে কেউ ব্যভিচার করলে কি সে খুশি হবে ? উত্তরে সাহাবী যখন বললেন “না” তখন তিনি বললেন সে যার সাথে ব্যভিচার করতে চায় সেওতো কারওই মা, বোন, মেয়ে। এরপর সাহাবী নিজের ভুল বুঝতে পেরে এই পথ থেকে ফিরে আসেন।
[অথবা কথাগুলো এমনই]

মুখে আমরা সর্বদাই বলি যে, রাসূলুল্লাহ (সা) পাপীকে রোগীর চোখে দেখতেন। কিন্তু যখন আমাদের সামনে কোন সোস্যাল ক্রাইসিস এসে দাঁড়ায় তখন আমরা ভিকটিমদেরকে রোগীর চোখেই দেখি বটে তবে একেবারে ছুরি-কাঁচি নিয়ে তৎক্ষণাৎ সার্জারী করতে ঝাঁপিয়ে পড়ি। এতে যে রোগীর প্রাণ যেতে পারে সেটাই বেমালুম ভুলে যাই।

তবে কি আমরা চুপ থাকব এসব ইস্যুতে ? কখনই না, সেটাও আরেক অন্যায়। “আমার দেহ আমি ঢাকব, যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ঢাকব” টাইপের স্লোগানেও আমরা যেমন যাব না তেমনি ভিকটিমদেরকে কিছুতেই বলব না যে এটাই তাদের প্রাপ্য। এমন আচরণ কারওই প্রাপ্য নয়, সে মুসলিম হোক আর অমুসলিমই হোক। এটার সংঘটন কোন ধর্মীয় ইস্যু নয় কিন্তু এর সমাধানটা ইসলাম ধর্মীয়। তার মধ্যে এসব শির্কি অনুষ্ঠান বন্ধ, সর্বদা পুরুষদের দৃষ্টি নত রাখা এবং নারীদের পরিপূর্ণ হিজাব সমস্তই অন্তর্ভুক্ত।

আল্লাহু আ’লাম।

১৬ এপ্রিল, ২০১৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *