বছর দুয়েক আগের কথা। বায়তুল মোকাররম গেছি জুব্বা কিনতে। এমন সময় এক পরিচিতজনের ফোন। ফোন ধরার সাথে সাথেই ঝড়ের গতিতে বলে-
:এই তাড়াতাড়ি কুরআনের ২-১ টা মিরাকল বল। এক্ষুণি, তাড়াতাড়ি…
: (কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে) মানে? হঠাৎ এসব কেন? বুঝিয়ে বল।
:সময় নাই, তাত্তারি বল। আরে বল না…
বুঝলাম কাহিনী। তার এক আত্মীয় নাস্তিক। তো সে ঐ আত্মীয়ের সাথে কথা বলতে যেয়ে ইসলাম সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান না থাকায় বিপাকে পড়ে গেছে। এখন ফোন দিয়ে হা-হুতাশ করে মিরাকল খুঁজে। আসলে সে নিজেও কিছুমাত্র প্র্যাক্টিসিং ছিল না, কিন্তু ইসলামের প্রতি জন্মগত টানের কারণে এথেজমকে ডিফেণ্ড করার চেষ্টা করছিল। ফলাফল-স্পষ্ট।
ইসলাম মানুষের ফিতরাতের সাথে জড়িয়ে আছে, রূহের জগতে সাক্ষ্য দিয়েই প্রতিটা মানুষ দুনিয়ায় এসেছে, এরপর পারিপার্শ্বিকতার কবলে পড়ে পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে। সত্য অনুসন্ধানকারী সত্য খুঁজতে খুঁজতে যখন ফিতরাতের সাথে ওভারল্যাপ করে তখনই ইসলামের আলো তার মধ্যে জ্বলে ওঠে। খোলা মন নিয়ে সত্য অনুসন্ধান করলে ফিতরাতের কাছে সে ফিরে যেতে বাধ্য। আর যারা ইতোমধ্যেই জেনেবুঝে সত্যের সন্ধান পেয়ে গেছে তাদের উচিত হবে ঐসব রিফিউটেশন নিয়ে প্যাচাল না পেড়ে ‘আমল ও আখলাকের মাধ্যমে ইসলামকে রিপ্রেজেন্ট করা-এটাই সর্বোত্তম দাওয়াহ।
আসলে আমি একটা কথা সবসময়ই বলি- কেউ যেমন শুধু anti-islamic ব্লগ পড়ে নাস্তিক হয় না তেমনি রিফিউটেশন পড়েও ধর্মপ্রাণ হয় না। বড়জোর যেটা হয় তা হল anti-islamic ব্লগগুলো নাস্তিকদের মনের ব্যাধি আরও বাড়িয়ে দেয় এবং রিফিউটেশনগুলো (বিশেষত সায়েন্টিফিক মিরাকল বেসড) বিজ্ঞানপূজারী আস্তিকের মনকে কিছুটা প্রশান্ত করে মাত্র। অজ্ঞ মানুষের সীমিত জ্ঞানের ফসল বিজ্ঞানের প্রতি অন্ধবিশ্বাস থেকে আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
পলাশী, ঢাকা
১৭ ডিসেম্বর, ২০১৪