ইসলাম: কেন অন্য ধর্ম নয়?

মানুষ নিজের ইচ্ছায় এ পৃথিবীতে আসেনি। আল্লাহ তাঁর ইচ্ছায় মানুষকে পৃথিবীতে প্রেরন করেছেন। এর মধ্যে কেউ মুসলিমদের ঘরে জন্মগ্রহন করে, কেউবা জন্মগ্রহন করে হিন্দু, খ্রীস্টিয়ান, ইহুদী কিংবা বৌদ্ধের ঘরে। যে যেই ঘরেই জন্ম নিক না কেন, বড় হওয়ার পর চিন্তাশীল মানুষ মাত্রই যখন দেখে, প্রত্যেক ধর্মই নিজেদের সত্য হওয়ার জোড়ালো দাবি করে ,তখন সে সত্য ধর্ম অন্বেষণের পথে পা বাড়ায়। আল্লাহ তা আলা প্রত্যেককে একই ধর্মের করে সৃষ্টি করতে পারতেন। কিন্তু কে সত্যান্বেষী তা পরীক্ষা করার জন্য তিনি তা করেননি। আল্লাহ  বলেন-

“আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে”। (সূরা বাকারা-২৮৬)

“আপনার পালনকর্তা কারও প্রতি জুলুম করবেন না”। (সূরা কাহাফ-৪৯)

আল্লাহ যেহেতু কারো উপর তার সাধ্যের অতীত বোঝা চাপিয়ে দেননা আর কারো উপর জুলুম করেন না, তাই ফলাফলের সময় ও তিনি সেভাবেই দিবেন।

সবাই তো নিজেকে সত্য বলে দাবি করে, তাহলে আসল সত্য কোনটা? আর আসল সত্যের সন্ধানই বা আমরা কি করে পাব? চার, পাঁচ বছর আগে যখন ইসলাম নিয়ে সংশয়ে পড়ে যাই তখন পড়াশুনা শুরু করি। জানার জন্য পড়েছি অনেক চিন্তাধারার বই।গিয়েছি অনেক ধর্মের ও চিন্তার লোকের কাছে। তাদের কাছ থেকে বুঝতে চেয়েছি আসলে তারা কিভাবে নিজেদের সত্য প্রমান করে। গিয়েছিলাম কাদিয়ানীদের অফিসে। তারা বলছে আমিও বলছি। এক পর্যায়ে তারা বলল, আপনি খাস দিলে আল্লাহর কাছে চান দেখবেন আল্লাহই আপনাকে বলে দিবে যে কাদিয়ানীরাই ঠিক আছে। গিয়েছিলাম ঢাকায় বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটির পাশে খ্রিষ্টীয়ানদের এক স্কুলে। সেখানকার এক শিক্ষক (উনি রেভারেন্ড হয়ে ছিলেন) এর সাথে কথা হল যে ছিল হিন্দু থেকে কনভার্ট।আলহামদুলিল্লাহ তিনি বাইবেল থেকে বলছিলেন আমিও বাইবেল থেকেই তা রিফিউট করছিলাম। এক পর্যায়ে তিনি যখন বুঝতে পারলেন তার সত্য প্রমান হচ্ছে না তিনি চলে গেলেন আধ্যাত্মিক লাইনে। তিনি বলা শুরু করলেন তিনি কিভাবে খ্রিস্টিয়ান হলেন।রাতে নাকি স্বয়ং যীশু এসেই তাকে খ্রিস্টধর্মের সন্ধান দিয়েছিলেন। মুসলিমদের মধ্যেও অনেকে এমন আধ্যাত্মিকভাবে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানোর চেষ্টা করে।

এভাবে আধ্যাত্মিকভাবে দাওয়াত পৌঁছানো কতটা ঠিক আমি জানি না। তবে এতটুকু বুঝি এরকমভাবে চিন্তা করলে তো সবাই ঠিক পথেই আছে। আমাদের নবী মুহাম্মদ সঃ কে যেহেতু আমরা সত্য নবী বলেই মানি তাহলে তিনি কেন দ্বীন প্রচার করার জন্য এত কষ্ট করলেন? কেন তিনি বনু তামীম গোত্র যখন তার কাছে ইসলাম গ্রহনের আগে ইসলামের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বক্তৃতা এবং কবিতাকে মানদন্ড হিসেবে গ্রহন করলেন তখন তিনি কেন সাবেত বিন কায়েস আর হাসসান বিন সাবিত (রাঃ)কে মুসলিমদের পক্ষ থেকে দাঁড় করিয়ে দিলেন?রুকানা নামক এক কুস্তিগীর যখন তাঁর নবুয়াতের সত্যতা, ইসলামের সত্যতার প্রমান চাইলেন তিনি তার সাথে কেন কুস্তি খেললেন?তিনি তো বলতে পারতেন হে রুকানাঃবাড়িতে গিয়ে খাস দিলে খোদাকে ডাক তিনি তোমাকে বলে দিবেন কে সত্য। তিনি কেন মদীনার মত রাষ্ট্রগঠন করে মানুষকে ইসলামের সৌন্দর্য ও সত্যতা দেখালেন?তিনি তো এরকম আধ্যাত্মিক উপায় অবলম্বন করেন নি।

 আল্লাহ নিশ্চয়ই তাঁর বান্দাদে সৎ পথ দেখাবেন।বান্দা যদি সহীহ নিয়তে গবেষনা করে অবশ্যই তিনি সত দেখাবেন।আল্লাহ কোর আনে বলেছেন প্রত্যেকে মানুষই ইসলামের ফিতরাতের উপর জন্ম গ্রহন করে।আল্লাহ বলেন-

তুমি একনিষ্ঠ ভাবে নিজেকে ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। এটাই আল্লাহর প্রকৃতি, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল ধর্ম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।সুরা রুম-৩০

তাই স্বভাবতই মানুষের ফিতরাতই মানুষকে ইসলামের দিকে ধাবিত করে কিন্তু সঠিক জ্ঞান ও প্রমানের অভাবে শয়তান তাকে পথভ্রষ্ট করতে পারে।তাইতো আল্লাহ কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় বার বার জ্ঞানীদের জন্য আছে নিদর্শন কথাটা উল্লেখ করেছেন।যারা জ্ঞানী তারাই সত্য আর মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করে প্রকৃত সত্যের দিকে ধাবিত হতে পারেন।ধরুন এখন কেউ এসে কিছু অলৌকিকতা দেখিয়ে বলল সে নবী।আপনি বিশ্বাস করবেন?না।কারন ইসলাম এমন কি বাইবেলসহ অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ   ঘোষনা করছে মহানবী (সঃ) এর পর আর কোন নবী আসবেন না।কেউ যদি বলে সে কবরের কাছে গিয়ে ডাকার ফলে কবরের ভেতর থেকে জবাব এসেছে।আপনি বিশ্বাস করবেন?না।কারন ইসলামের কোন দলিল এরকম কিছুর প্রমান আপনাকে দিচ্ছে না।মহানবী (সঃ) মোজেজা,তাঁর চরিত্র,সুন্দর সমাজ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে তার সত্যতা দেখিয়েছেন।সাথে সাথে যুক্তি এবং দলিল দ্বারা তিনি মানুষকে ইসলাম এবং তার নবুওয়াতের সত্যতা প্রমানে সচেষ্ট ছিলেন।দলিল স্বরূপ আল্লাহ কোরানে বলেন-

সেসমস্ত লোক, যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রসূলের, যিনি উম্মী নবী, যাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়।সুরা আরাফ-১৫৭

এখানেও দলিলভিত্তিক বিশ্বাসের ধারনা পাওয়া যায়।আমি যে কথাটা বুঝানোর জন্য এত বড় ভূমিকার অবতারনা করলাম তা হচ্ছে আপনি যে ধর্মই মানেন না কেন আপনার বিশ্বাসের পিছনে প্রমান থাকতে হবে।এরকম আধ্যাত্মিকতার অবকাশ কতটুকু আছে আমার জানা নেই।

 আমার এ ছোট্ট ইসলাম নিয়ে পড়াশোনার জীবনে অনেক কিছুরই সন্ধান পেয়েছি যা অন্য সকল মতবাদের থেকে ইসলামের স্বতন্ত্রতা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।আমার অন্যান্য নোট পড়লে অনেক কিছুই আপনার নজরে  আসবে।আজ আমি মূলত অন্যান্য ধর্ম বা মতবাদের সাথে ইসলামের  পার্থক্যসূচক তিনটি বিষয় তুলে ধরব যা সবাই খুব সহজেই উপলব্ধি করতে পারবে।বিষয় তিনটি হল-

১,ধর্মের নাম

২,স্রষ্টার ধারনা

৩,জাগতিক ও আত্মিক বিশ্বের সমন্বয়

ধর্মের নামঃআপনি যদি একটু চিন্তাশীল হয়ে সব ধর্মের নামগুলোর দিকে তাকান তাহলে এক অদ্ভুত সত্য আপনার চোখে পড়বে।অন্যান্য নামের সাথে ইসলাম নামটির মধ্যে আছে এক ভিন্নতা।অন্যান্য সব বড় ধর্মের নামই হয় ব্যক্তি কেন্দ্রিক ,না হয় এলাকা কেন্দ্রিক কিংবা গোত্র কেন্দ্রিক।এবং অনেক ধর্মই যাদের নামে গঠিত হয়েছে তারা জীবিত থাকতে সে কথা জানতেন না।খ্রীস্ট ধর্ম এসেছে যীশু খ্রীস্টের নাম থেকে,বুদ্ধ ধর্ম এসেছে গৌতম বুদ্ধের নাম থেকে,কনফুসিয়াসের নামানুসারে কনফুসানিজম এসেছে।জুদা গোত্রের নামানুসারেই জুডাইজম বা ইহুদি ধর্মের গোড়া পত্তন।হিন্দু শব্দটার এ একটি ভৌগলিক বিশষত্ব আছে।যারা সিন্দু নদের ওপারে বাসকরে বা যে মানব সম্প্রদায় সিন্দু নদের অববাহিকায় বাস করে তাদেরকে হিন্দু বলা হয়।পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর বই  “ডিসকভারি অব ইন্ডিয়া”তে আছে হিন্দু শব্দটা প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল ৮ম শতাব্দীতে তান্ত্রিকদের বুঝানোর জন্য।আর এ শব্দতা দিয়ে বুঝানো হত একদল মানুষকে কোন ধর্মকে বুঝানো হত না।ধর্মের সাথে এ শব্দটা যুক্ত হয়েছে অনেক পরে।কোন ধর্মই দাবী করতে পারে না সে ধর্মের নামটি স্রষ্টাপ্রদত্ত।খ্রিস্টিয়ানিটি শব্দটা আপনি পুরো বাইবেলে খুঁজে পাবেন না।বাইবেলের তিন জায়গায় খ্রিস্টিয়ান (Acts 11:26,Acts 26:28,1Peter 4:16) শব্দটি আসলেও কোথাও খ্রিস্টিয়ানিটি নামক শব্দটি খুঁজে পাবেন না।এমনকি খ্রীস্টিয়ান টাইটেলটি যারা যীশুকে অনুসরন করত তাদেরকে যীশুর শত্রুরা অবজ্ঞা করে দিয়েছিল। জুডাইজম বা ইহুদি ধর্ম আপনি বাইবেলের কোথাও পাবেন না।মুসা আঃ জীবনে এ ধর্মের নাম শুনেন নি।

অপরদিকে ইসলাম নামের অর্থ “শান্তি”।এর আরেকটি অর্থ নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর কাছে সমর্পন করা।ইসলাম শব্দটি উল্লেখ আছে পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন জায়গায়।এমনকি সহীহে হাদীসের অনেক জায়গায় ইসলাম শব্দটি উল্লেখ আছে।আল্লাহ কোরানে বলেন-

 নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম।সুর আলে ইমরান-১৯

যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত।সূরা আলে ইমরান-৮৫

যারা এ দ্বীন ইসলামের অনুসারী তাদেরকে মুসলিম বলা হয়।এ মুসলিম শব্দটিও কোরানের বিভিন্ন জায়গায় এসেছে।পূর্ববতী সকল নবী রাসুলগনই মুসলিম ছিলেন।তাদের অনুসারীরাও মুসলিম ছিলেন।মুসলিম নামটি আল্লাহ প্রদত্ত।কুরানসহ সহ সমস্ত পূর্ববর্তী কিতাবে এ মুসলিম নামটি উল্লেখ ছিল।আল্লাহ বলেন-

আমি আগেই বলেছি ইসলাম অর্থ নিজের ইচ্ছাকে আল্লাহর নিকট সমর্পন করা।আর যে সমর্পন করে তাকে মুসলিম বলে আখ্যায়িত করা হয়।মুসলিমরা সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী করে।এ অর্থে যীশু ও মুসলিম ছিলেন তা বাইবেল দ্বারাই প্রমানিত।বাইবেলে আছে-

আমার স্বর্গের পিতার ইচ্ছা যে পালন করবে সেই কেবল স্বর্গ রাজ্যে প্রবেশ করিতে পারিবে।মথি-৭ঃ২১

আমি নিজের হইতে কিছুই করিতে পারিনা।আমি যেমন শুনি(ঈশ্বরের কাছ থেকে) তেমন বিচার করি।আর আমার বিচার ন্যায্য,কারন আমি আমার ইচ্ছা মত কাজ করি না,বরং যিনি ঈশ্বর আমাকে পাঠিয়েছেন তারই ইচ্ছা পূরন করার চেষ্টা করি।যোহন ৫:৩০

অতএব বাইবেলের উপরোক্ত বানীগুলো থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে যীশুখ্রীস্টও মুসলিম ছিলেন।

স্রষ্টার ধারনাঃইসলাম মানুষকে যেভাবে স্রষ্টা সম্পর্কে ধারনা দেয় অন্য কোন ধর্ম তা দেয় না।বাইবেলে একটা অনুচ্ছেদ আছে এরকম

“so God created man in his own image”। Genesis 1:27

আমার মতে বাইবেলের এই কথাটি বাস্তবতার সাথে এবং সত্যের সাথে পুরোপুরি ইনভার্স।আপনি যদি বাস্তবতার দিকে তাকান তাহলে বাইবেলের বানীটি এভাবে বলা উচিত

“so man(not all) created God in his own image”

সকল ধর্মের দিকে যদি আপনি একটু কোতুহলী দৃষ্টি দেন তাহলে দেখবেন মোটামুটি সকল প্রধান ধর্মের মানুষই স্রষ্টাকে নিজেদের মত কল্পনা করে নিয়েছে।এর মধ্যে অনেক ধর্মই আছে যারা একাধিক স্রষ্টাকে বিশ্বাস করে।যদিও তাদের ধর্মীয় গ্রন্থ গুলোতে এক স্রষ্টার ধারনা পাওয়া যায় কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তারা ধর্মগুলোকে নিজেদের মত করে পরিবর্তন করে নিয়েছে। হিন্দুধর্মানুসা্রে ঈশ্বর মানবাকৃতিতে পৃথিবীতে আসেন।একে অবতারবাদ বলা হয়।তারা রাম,কৃষ্ণ,সহ বহু সংখ্যক মানুষকে স্রষ্টার আসনে বসিয়ে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে তাদের পূজায় ব্যস্ত।অপরদিকে খ্রীস্টধর্ম ও বিশ্বাস করে স্রষ্টা কেবলমাত্র একবারই এ পৃথিবীতে মানবরূপ ধারন করে এসেছে।আর সে হচ্ছে যীশু। বৌদ্ধ ধর্ম সহ অন্যান্য অনেক ধর্মই রক্ত মাংসের মানুষকে স্রষ্টার আসনে বসিয়ে ফেলেছে।অপরদিকে ইসলামের স্রষ্টার ধারনা অন্য সকল ধর্ম থেকেই ব্যতিক্রম।ইসলাম অনুসারে স্রষ্টা মাত্র একজনই।আলহামদুলিল্লাহ মুসলিমরা এখনও এক আল্লাহকেই মানে এবং তাঁরই ইবাদত করে।এটা সত্য অনেক মুসলিমদের মধ্যে শিরক ঢুঁকে গেছে।তবে ধর্মগ্রন্থ অপরিবর্তিত থাকার কারনে আমাদের মধ্যে আল্লাহর একত্ব বাদের স্বীকার করে নেয়ার মধ্যে কোন মত পার্থক্য সৃষ্টি হয় নি।আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহকে এ পৃথিবীতে দেখা যাবে না।আল্লাহ বলেন-

দৃষ্টিসমূহ তাঁকে পেতে পারে না, অবশ্য তিনি দৃষ্টিসমূহকে পেতে পারেন। তিনি অত্যন্ত সুক্ষদর্শী, সুবিজ্ঞ।সূরা আনআম-১০৩

মূলত এরকম ধারনাই ইসলামকে অন্য ধর্ম গুলোর থেকে স্বতন্ত্র আসন দান করেছে।ইসলাম স্রষ্টার বিভিন্ন গুনাবলী ও বৈশিষ্ট্যকে  যেভাবে সুন্দররূপে উপস্থাপন করেছে অন্য কোন ধর্ম তা করতে পারেনি।অপরদিকে এসকল গুনাবলী ও বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আপনি কোন অসামঞ্জস্যতা দেখবেন না।এ পৃথিবীতে যত নবী রাসুল এসেছেন সকলকেই আল্লাহ মূলত একটিমাত্র মেসেজ দিয়েই পাঠিয়েছিলেন।তা হল-

“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”

মানুষ যতই ধর্মগ্রন্থ পরিবর্তন করুক আনা কেন এখনো আপনি এর সত্যতা বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে পাবেন।যতই খ্রিস্টিয়ানরা ত্রিত্ববাদের কথা বলুক না কেন আজো বাইবেলে এ  অনুচ্ছেদটি ইসলামের সাক্ষ্যই দিয়ে যায়-

শ্যামা ইসরাইলো আদোনাই ইলা হাইনো আদোনা ইখাত।

হে ইসরাঈলবাসীরাঃআমাদের ঈশ্বর একজনই। মার্ক ১২:২৯

আজো হিন্দু গ্রন্থগুলো স্রষ্টার একত্বের কথা বলে মানুষকে ইসলাম মেনে নিতে উৎসাহ জোগায়।হিন্দুধর্মের গ্রন্থ গুলোতে নিম্নোক্ত অনুচ্ছেদ গুলো মানুষকে ইসলামের পথেই পরিচালিত করে।

“একম এভিদ্বিতীয়ম” অর্থাৎ স্রষ্টা এক ও অদ্বিতীয়।chandgya Upanishad 6:2:1

“তাঁর মত কিছুই নেই”।শ্বেতাসত্র উপনিষদ ৪ঃ১৯

জাগতিক ও আত্মিক বিশ্বের সমন্বয়ঃঅন্যান্য ধর্ম ও মতবাদগুলো মানুষকে হয় জাগতিক অর্থাৎ বস্তুবাদের দিকে নিয়ে যায় অথবা পুরোপুরি আত্মিক চিন্তাধারার দিকে নিয়ে যায়।ইসলামই একমাত্র ধর্ম যা জাগতিক ও আত্মিক বিশ্বের সাথে পুরোপুরি সমন্বয় সাধন করেছে।কিছু ধর্ম ও মতবাদ আছে যারা শুধুমাত্র মাটির নিচের কথা আর আকাশের উপরের কথা বলে।আর কিছু মতবাদ আছে যারা শুধুমাত্র এ দুটোর মাঝখানের অর্থাৎ শুধুমাত্র পৃথিবীর সুখ সমৃদ্ধির কথাই বলে সেখানে ইসলাম সবকিছুর মধ্যে বিস্ময়কর সমন্বয় সাধন করেছে। যেখানে আপনাকে একজন ভাল উঁচুমাপের খ্রীস্টিয়ান হতে হলে সাংসারিক জীবন পরিত্যাগ করতে হবে।একইভাবে বৌদ্ধ ও হিন্দুধর্মও মোটামুটি একই শিক্ষাই দেয় সেখানে ইসলামের প্রধান বাহক মুসলিমদের অনুসরনীয় আদর্শ মুহাম্মদ (সঃ) বিবাহিত জীবন যাপন করেছেন।অপরদিকে মার্ক্সবাদ সহ অন্যান্য অনেক মতবাদই মানুষকে বস্তুবাদের দিকে ধাবিত করে।মানুষকে প্রবৃত্তির দাস বানিয়ে ফেলে।ইসলাম মানুষকে এক আল্লাহর দাস বানিয়ে দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তির দিকে পরিচালিত করে।আল্লাহ মানুষকে যে দুআ শিখিয়েছেন তার মধ্যে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যানের কথা সমানভাবে বলা হয়েছে।আল্লাহ বলেন-

হে পরওয়ারদেগার! আমাদিগকে দুনয়াতেও কল্যাণ দান কর এবং আখেরাতেও কল্যাণ দান কর।সূরা বাকারা-২০১

ইসলামকে আল্লাহ পাঠিয়েছেন সব মতবাদ ও ধর্মের বিরুদ্ধে বিজয়ী করার জন্য।সকল মতবাদের উপর নিজের শ্রেষ্টত্ব প্রতিষ্ঠিত করার জন্য।তাই আলহামদুলিল্লাহ ইসলাম ফসলের মাঠ থেকে সংসদ,স্কুল থেকে অফিস আদালত,পারিবারিক জীবন থেকে যুদ্ধের ময়দান সবজায়গার পুঙ্খানুপুঙ্খ সমাধান দেয়।

তাই একজন মানুষ নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে, খোলা মন নিয়ে যদি ধর্মের গবেষনা শুরু করে তাহলে সে ইসলামের সাথে অন্যান্য ধর্মের মৌলিক পার্থক্য দেখতে পাবে এবং ইসলামের শ্রেষ্টত্ব উপলব্ধি করতে পারবে। তাই আসুন আমরা মানুষকে ইসলামের সোন্দর্য দেখিয়ে আল্লাহর দেয়া দায়িত্ব পালনে সতেষ্ট হই।

Allah knows da best………

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *