অতি ‘না’ কে ‘না’ বলুন

গ্রীক ফিলোসফারদের একটা মহা সমস্যা ছিল তারা স্রষ্টাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে নেতিবাচক দিকটিকে প্রাধ্যান্য দিত। সিফাত ও গুনাবলীর নাবাচক আলোচনা তাদের লেখালেখিতে এত বেশী প্রাধান্য পেত যে, আল্লাহ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে নেগেটিভ ধারনাই বেশী ডোমিনেন্ট থাকত। তাদের লেখালেখি পড়লে আপনার মনে হবে স্রষ্টা একটি নিষ্ক্রিয়,অক্ষম ও কাল্পনিক সত্ত্বা। পক্ষান্তরে আল্লাহকে নিয়ে যখন তারা ইতিবাচক কিছু লিখত তখন তারা দুচারলাইনেই ক্ষান্ত দিত।

মানুষের ধর্মবিশ্বাস এর সূচনা স্রষ্টাবিশ্বাসকে তথা স্রষ্টার প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিকে কেন্দ্র করে। স্রষ্টা সাথে যখন মানুষের হৃদয় ও আত্মার সম্পর্ক তৈরি হয় তখন থেকে ধর্মবিশ্বাসের সূচনা।স্রষ্টার প্রতি স্রষ্টার গুনাবলীর প্রতি যতক্ষন আপনার সঠিক স্পষ্ট ধারণা তৈরি হবে ততক্ষন স্রষ্টার সাথে হৃদয়াত্মার সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারেনা। আর ভাসা ভাসা জ্ঞান নিয়ে স্রষ্টার সাথে সে সম্পর্কের মিষ্টতা উপভোগ করা যায়না। পাশ্চাত্যের কোলে গ্রীক দর্শন এবং প্রাচ্যের কোলে বৌদ্ধ ধর্ম স্রষ্টার  ইতিবাচক গুনাবলীগুলো সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেনি। স্রষ্টাকে সঠিকভাবে চিনিয়ে মানুষের হৃদয়ের সাথে সংযুক্ত করতে তারা চরমভাবে ব্যার্থ হয়েছে। স্রষ্টার ধারণার উপর আদর্শ সমাজ গড়তে তারা মর্মান্তিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। হয়ত  এ কারণেই এই দুই দর্শন দ্বারা প্রভাবিত সমাজের একটিতে সংশয়বাদি মূর্তিপূজা এবং অপরটিতে নাস্তিকতা ভিত গেড়েছে।

অপরদিকে আল্লাহর সিফাত ও গুনাবলীর ক্ষেত্রে কুরআন সর্বদা বিস্তারিত বর্ননা করেছে এবং নেতিবাচক ক্ষেত্রে শুধু সাদৃশ্য অস্বীকার করেই ক্ষান্ত হয়েছে। নবী রাসূলরা যখন মানুষকে দাওয়াত দিতেন তখন তাদেরও নীতি ছিল ইতিবাচকক্ষেত্রে ‘সম্প্রসারণ’ এবং নেতিবাচক ক্ষেত্রে ‘সংকোচন’। কোরআনের আয়াতগুলোতে

আমরা যখন একটা বাচ্চার মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধ ইনস্টল করতে চাই তখন বেশীরভাগক্ষেত্রে যেটা দেখা যায় আমরা তাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে ভয় দেখিয়ে থাকি। ‘এটা করলে আল্লাহ শাস্তি দিবে’ ‘ওটা করলে আল্লাহ তোমাকে দোযখে নিক্ষেপ করবে’ এভাবে মনে অজান্তেই তাদের মনের সাদা কাগজে আল্লাহকে ‘গুন্ডা’ ‘মাস্তান’ হিসেবে চিত্রায়িত করি…

অথচ আল্লাহর গুনবাচক নামগুলোর মধ্যে আররাহীম,আর রহমান,আসসালাম(শান্তি) আল ওয়াদূদ(  নামগুলো ঘুরে ফিরে বেশিরভাগ সময় এসেছে।

দাওয়াতের ক্ষেত্রেও আমাদের অবস্থা একই রকম। যেসব জায়গায় আমরা বেশী বেশী ‘না’ উচ্চারন করতে পারব সেখানেই আমাদের ইন্টারেস্ট বেশী। না বাচক জিনিসগুলোকে সামনে এনে অসংখ্য হাঁ বাচক জিনিসগুলোকে এড়িয়ে গিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

ইবনে তাইমিয়া বলেছেন-

“লক্ষ ‘না’ একটি ‘হাঁ’ এর সমকক্ষ হতে পারেনা”

পজিটিভ এটিটিউড নিয়ে পজিটিভ জিনিসগুলো নিয়ে কাজ করলে ফলাফল পজিটিভ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী থাকে …

আমার ব্যক্তিগত উপলব্ধি, অতি ‘না’কে ‘না’ বলা শিখতে হবে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *