যুহদের একটা বই আমাদের প্রত্যেকের প্রাত্যহিক তালীমের লিস্টে রাখা উচিৎ, তারও চেয়ে উত্তম হয় যুহদের কিছু দৃষ্টান্ত আমাদের মনে-মননে-মগজে এনকোড করে রাখা। যক্ষণই মনে হবে:
♦ আহা! অমুক আত্মীয় কত্ত টাকাওয়ালা, দ্বীন করে আমি আর কী পেলাম?
♦ আহা! ও এত ভালো একটা জব পেয়ে গেলো, দ্বীনের কারণে কত কত জবের অফার পেয়েও নিতে পারছিনা….
♦ আহা! ফ্রেন্ডরা সবাই মৌজমাস্তি করে বেড়াচ্ছে, ঘুরছে খাচ্ছে দাচ্ছে, পর্দাপালনের জন্য আমার লাইফটাই বোরিং হয়ে যাচ্ছে…
♦ আহা! পদবীর কারণে সামনে পেছনে কত্ত গিফট, কত্ত সুযোগ সুবিধা সবাই লুফে নিচ্ছে! চোখের সামনে পেয়েও আল্লাহর ভয়ে ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে….

সঙ্গে সঙ্গে ব্রেইনের ‘যুহদ মেমোরি’ বাটনে প্রেস করুন: আল্লাহর রাসূল সা: বিশ্বনবী হয়েও তার ঘরে দুবেলা চুলো জ্বলেনি, উমার রা: অর্ধ পৃথিবীর শাসক হয়ে তালি দেয়া কাপড় পরেছেন, খুলাফায়ে রাশেদীনের যুগে যেসব সাহাবাকে গভর্নর করে বিভিন্ন রাজ্যে পাঠানো হয়েছিল, তাদের ঘরে গেলে দেখা যেতো টেনেটুনে একজন মানুষের থাকার সমান জায়গা আছে হয়তো, খাবার ছিলো শুকনো যবের রুটি, নিজ হাতে এক একটা শহর চালিয়েছেন, হাজার হাজার দিরহাম হাতে এসেছে আর উনারা দিনের মধ্যেই সব বিতরণ করে রাতে রিক্তহস্তে ঘুমোতে গেছেন, মৃত্যুর সময় ঘরে দু’চার-পাচটির বেশি আসবাব খুজে পাওয়া যায়নি, তাও খাবার থালা, পানির মশক, যুদ্ধের বর্মের মত অনাবশ্যক জিনিস….

আর এই আমরা? কতটুকু ত্যাগ করছি দ্বীনের জন্য? সাহাবারা, তাবেঈরা, সালাফ আস সালেহীনরা দুনিয়াকে দুহাতে সর্বশক্তিতে দূরে ঠেলেছেন জান্নাতের নেশায়, আমরাও সেই একই জান্নাতের প্রত্যাশী: একজন জান্নাতের প্রত্যাশীর অন্তর কি করে দুনিয়ার সামান্য অপ্রাপ্তির অনুভূতিতে আচ্ছন্ন হতে পারে?? বিশাল এই পৃথিবীর সমস্ত সম্পদের বিনিময় তো জান্নাতের এক চিলতে জায়গার মূল্যও হতে পারেনা, তাইনা?

“নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা মু’মিনদের থেকে তাদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন। তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে অত:পর তারা (কাফেরদের) মারে এবং (নিজেরাও) মরে। তাদের প্রতি তাওরাত, ইনজিল ও কুরআনে (জান্নাত) দানের পাকাপোক্ত ওয়াদা করা হয়েছে। আল্লাহর চাইতে বেশি ওয়াদা পূরণকারী কে আছে? অতএব, (হে মুমিনরা!) তোমরা খুশি হয়ে যাও সেই বেচা-কেনার জন্য, যা তোমরা আল্লাহর সাথে করেছো। আর এটিইতো সবচেয়ে বড় সাফল্য।”
[সূরা আততাওবাহ : ১১১]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *