সোনার আংটি…পুরুষের?

ছেলেদের জন্য গোল্ডের রিং পরা কি জায়েয? বিয়েতে পাত্রকে কনেপক্ষ থেকে গোল্ডের রিং দেওয়াতে কোন সমস্যা আছে কি?
~ ছেলেদের জন্য গোল্ড পরা হারাম। একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম একব্যক্তির হাতে একটা আংটি পরা দেখে সেটি খুলে নিলেন এবং বললেন: “তোমাদের মধ্যে কেউ কি আগুনের মধ্য থেকে একটা কয়লার টুকরো হাতে তুলে নিবে?”
হাদীসটি সহীহ মুসলিম শরীফ থেকে নেওয়া।
আরেকবার রাসূলুল্লাহ সা: ডান হাতে রেশম এবং বাম হাতে স্বর্ণ নিয়ে বললেন: “এ দুটি আমার উম্মতের পুরুষদের জন্য হারাম এবং নারীদের জন্য হালাল করা হয়েছে।”
[আবুদাউদ হা/৪০৫৭; ইবনু মাজাহ হা/৩৫৯৫; মিশকাত হা/৪৩৯৪]

তবে,
* পুরুষের জন্য অন্য কোন ধাতু যেমন: সিলভার, প্লাটিনাম এসবের রিং পরা বৈধ। রাসূল সা: বামহাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলে রূপার আংটি পরেছেন বলে হাদীস থেকে জানা যায়। তবে হোয়াইট গোল্ডও জায়েয নয়, কারণ হোয়াইট গোল্ড বলতে বাজারে যেটা বিক্রি হয় সেটা আদতে ইয়েলো গোল্ডের সাথেই সামান্য কিছু কপার, প্লাটিনাম কিংবা সিলভার যোগ করা হয়। মূলত এটি গোল্ড হওয়ায় এটিও পুরুষের জন্য হারাম।
কোন কোন আলেমের মতে, সিলভার(রৌপ্য) ছাড়া তামা, পিতল এসবের আংটি পরাও মাকরূহ।

* বিয়েতে রিং ফিংগারে আংটি পরার রেওয়াজটি এসেছে খ্রিস্টধর্মের কিছু বিশ্বাস থেকে, সে হিসেবে এই কালচার অনুসরণ করা আমাদের জন্য অনুমোদিত না। বস্তুত, ইংগেজমেন্ট প্রথাটিই ইসলামিক কোন প্রথা না, বিয়ে পড়ানোর আগ পর্যন্ত স্বামী- স্ত্রী মাহরাম হতে পারেনা, তাই ইংগেজমেন্টের কোন শার’ঈ ভ্যালু নেই।

* আংটি পরার পেছনে বিশ্বাস যদি হয়: এতে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক মজবুত থাকবে, ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে, তবে তা শিরক হবে।

কিছু জিজ্ঞাসা,

** ‘পরার জন্য না, কালচার হিসেবে জাস্ট দেয়ার জন্যই দেয়া’ কি জায়েয হবে?
আমি একটা উদাহরণ দিই এই প্রশ্নের উত্তরে: আচ্ছা, আমি যদি আপনাকে এক বোতল হুইস্কি ধরিয়ে দিয়ে বলি যে এটি এমনিই দিলাম, খাওয়ার জন্যে না। ও যদি খায়, সেই দায়টি কার? ও যে না খেয়ে ফেলে দেবে, তার নিশ্চয়তা কী? কিংবা ও যদি ফেলেও দেয়, একটা হারাম জিনিস গিফট করা কি আমার জন্য বৈধ হতে পারে?

** পাত্রকে তবে ভালো কী দেওয়া যায়?
দিন না! ভালো ব্র‍্যান্ডের একটা রিস্টওয়াচ দিন, চাইলে একটা মোবাইল সেট, ব্লেজার, কোট… রিং দিতে খুব ইচ্ছে হলে অন্য কোন মেটালের রিং দিন। হালাল তো কতকিছুই আছে তাইনা??

** সবাই কী বলবে?
সবাই যা বলে বলুক, আমি আপনি থেকেই তো পরিবর্তনের শুরু হতে পারে, তাইনা? আপনি একটা হক্বের রেওয়াজ শুরু করুন, এটা ‘সাদাক্বাহ জারিয়া’ হয়ে যাবে; আপনাকে দেখে আগ্রহী হয়ে যদি একজনও সেটা এপ্লাই করে, সাওয়াবটুকু আপনার, চেইন রিএকশান বহুদূর যেতে পারে, আপনি কল্পনা করতেও পারেন না। আল্লাহ নিজেই তো বলেছেন, ভালো কথা একটি বৃক্ষের মত, যার শেকড় শক্ত আর শাখা-প্রশাখা বহুদূর বিস্তৃত। দুটো বেশি কথা শুনে না হয় একটি সৎ বৃক্ষ রোপণ করেই দেখুন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *