My Father my Hero ?

‘পৃথিবীর প্রত্যেক বাবা-ই তার সন্তানের কাছে হিরো’
প্রতিবার বাবা দিবস এলেই এই বহুল প্রচলিত বাণীটি শোনা যায়। আমি বলবো: নাহ, কক্ষণো না। প্রত্যেক বাবা-ই তার সন্তানের কাছে হিরো নয়। আমরা যেমন মানুষ, আমাদের বাবা মায়েরাও মানুষ: আমরা ভুল করি, তারাও করেন। আমাদের জীবনের অনেক ভালো গুণ আমরা বাবা মা থেকে জেনেটিক্যালি পাই, অনেক কিছু বাবা মাকে দেখে অর্জন করি, আবার অনেক কিছুই জ্ঞান, বিদ্যা, বুদ্ধি, বিবেক কিংবা ধর্মগ্রন্থ থেকে নিজ প্রচেষ্টায় শিখি, কিছু বিষয় আবার বাবা মায়ের কোয়ালিটি বর্জন করেও শিখি। বাবা মা ফিরিশতা নন, দেবতা নন, তারা যা-ই করেন, ভুল শুদ্ধ নির্বিচারে তা অনুসরণ করার কোন সুযোগও নেই।

আমাদের মুসলমানদের এক এবং একমাত্র আদর্শ কিংবা হিরো: মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম। ‘তোমাদের জন্য রাসূলের মধ্যেই রয়েছে উত্তম আদর্শ’ আল্লাহ তা’আলার নিজের ঘোষণা। সুতরাং, যার বা যাদের আদর্শ আমাদের রাসূলের আদর্শের সাথে মিলে, সেই আমাদের আদর্শ- যার সাথে মিলবেনা, সে অবশ্যই বর্জনীয়।

ইসলাম তো তাহলে খুব কঠোর! তুমি বাবা মাকে ভালোবাসোনা??
আপনার উত্তর দিচ্ছি। আমরা বাবাকে হিরো বলিনা মানেই এই নয় যে ভালোবাসিনা। ক্বুরআনে ও হাদীসে বার বার বার বার বাবা মায়ের হক্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের প্রতি বিনয়ের বাহু প্রসারিত করতে বলা হয়েছে, তাদের সাথে ‘উহ’ শব্দটিও করতে নিষেধ করা হয়েছে, তাদের প্রতি সর্বোত্তম আচরন করতে বলা হয়েছে, তাদের আত্মীয় কিংবা প্রিয়জনের সাথেও উত্তম ব্যবহার করতে বলা হয়েছে, তাদের মৃত্যুর পর দু’আ করতে বলা হয়েছে, তাদের সন্তুষ্টিতেই আল্লাহর সন্তুষ্টি….. এত এত মর্যাদা তাদের দেয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যতিক্রম একটাই: তারা যদি ‘শিরক’ এর আদেশ দেয় কিংবা আল্লাহর অবাধ্যতার নির্দেশ দেয়, তাহলে অবশ্যই তাদের আনুগত্যের প্রয়োজন নেই, আল্লাহর আনুগত্য সবার উপরে। কিন্তু সেই অবস্থায়ও তাদের সাথে উত্তম আচরন অব্যাহত রাখতে বলা হয়েছে। সাহাবাদের যুগের ঘটনা আমাদের অজানা নয়: পুত্র ইসলাম গ্রহণের পর মুসলিম আর কাফিরদের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে, হক্ব আর বাতিলের যুদ্ধ, পিতা পুত্র মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করেছে, নিজের পিতা কিংবা নিজের সন্তান বলে পিছিয়ে আসেনি, হক্ব বাতিলের প্রশ্নে তারা ছিলো এতখানি কঠিন….

সুতরাং আমাদের অবস্থান এমন হওয়া উচিৎ : বাবামায়ের সাথে সর্বাবস্থায় সর্বোত্তম ব্যবহার করা, তবে আদর্শের প্রশ্নে আদর্শ কেবল রাসূলুল্লাহ ও আসহাবে রাসূলুল্লাহ। বাবার যেসব কোয়ালিটি সেই মানদণ্ডে টিকে, সেগুলো অনুসরনীয়, যেগুলো টিকেনা সেগুলো অবশ্যই বর্জনীয়। তবে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রশ্নে আল্লাহ ও রাসূলের পরেই, অন্য সবার উপরে….♥

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *