কখনো ঝরে যেও না…

এই দমকা হাওয়া তোমাকে সমূলে উচ্ছেদ করে ফেলে দিতে চাইবে, তুমি হয়তো চারিদিকে তাকিয়ে অন্য কিছু গাছ কে সহজেই পড়ে যেতে দেখবে। কেউ হয়তো বাতাসের ধাক্কায় সমূলে উৎপাটিত হয়ে যাবে। এরা হলো মুনাফিক, এদের দুর্বল মূল সহজেই প্রকাশ হয়ে পড়ে। রাসূল সা. বিশেষভাবে মুনাফিককে এমন গাছের সাথে তুলনা করেছেন যেটা মৃদু বাতাসের সাথে দোলে না বরং স্থির থাকে। কিন্তু প্রচণ্ড দমকা হাওয়ায় মূলসহ উৎপাটিত হয়ে যায়।

সুতরাং তারা দলে দলে বাতাসের ধাক্কায় পড়ে যাক, তুমি তাদের মত হয়ো না। বরং তুমি তাদের প্রতি অনুকম্পা প্রদর্শন করো। আল্লাহর শোকর করো যে তিনি তোমাকে তাদের পরিণতি থেকে রক্ষা করেছেন এবং তারপর এগিয়ে যাও।তাদের জন্য ইসলাম ছিল একটা শখ মাত্র- এ সপ্তাহের আকর্ষণ।

বাতাস যখন বুঝতে পারবে যে তোমাকে মাটি থেকে সরাসরি তুলে ফেলা সম্ভব নয় তখন সে আরো সূক্ষ্ম পন্থা অবলম্বন করবে- সে চেষ্টা করবে তোমার পাতাগুলো কৌশলে ঝরিয়ে দিতে। কিন্তু সে তোমাকে সব গুলো পাতা একসাথে ঝরাতে বলবে না। কারণ সেটা তো তার দুরভিসন্ধি প্রকাশ করে দেবে। বরং তখন সেই বাতাস মৃদুভাবে বইবে যাতে করে তোমার একটা পাতা ঝরাতে পারে, তারপর আরেকটা, তারপর আরেকটা- যতক্ষণ না তুমি পাতাহীন বৃক্ষে পরিণত হও।

তাই এই ফাদে পা দেবেনা। বাতাসের মুখে একটা পাতাকেও ঝরাতে দেবেনা। যেভাবে রাসূলুল্লাহ সা. মুনাফিককে বাতাসের সাথে নুয়ে পড়া গাছের তুলনা দিয়েছেন, তেমনি ভাবে মুমিনকে খেজুর গাছের সাথে তুলনা করেছেন।

কারণ খেজুর গাছের পাতা কখনো ঝরে না। বাতাস যতই তীব্র হোক না কেন তার সামনে মুসলিম শুধু দাঁড়িয়েই থাকে না, বরং সব পাতা মেলে মাথা উঁচু করে থাকে। বাতাস যত তীব্র হবে তোমার পাতাগুলোকে আরও শক্ত করে আঁকড়ে ধরবে, আর এজন্যই তো তোমার বিরুদ্ধে বাতাসের এত ক্ষোভ।

“তারা তাদের উপর জুলুম চালিয়েছিল শুধু এ কারণে যে, তারা প্রশংসিত ও পরাক্রান্ত আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল।” (সূরাহ বুরূজ, ৮৫: ৮)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *