Angel number বা Mirror number (যেমন 11:11, 22:22, 12:21 ইত্যাদি) হলো এক ধরনের numerology belief, যা মূলত পশ্চিমা occult, নিউ এজ (New Age spirituality) এবং হিন্দু–বৌদ্ধ প্রভাবিত চিন্তা থেকে এসেছে। তারা বিশ্বাস করে যে, ফেরেশতা বা মহাবিশ্ব বিভিন্ন সংখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভিন্নরকম ইশারা বা গাইড দেয়। এগুলো মূলত কুসংস্কার (superstition) এবং ভাগ্য গণনার (fortune telling) অন্তর্ভুক্ত।
Numerology (সংখ্যাতত্ত্ব):
Numerology হলো এমন একটি বিশ্বাস, যেখানে মানুষ মনে করে সংখ্যার মধ্যে বিশেষ রহস্য, শক্তি বা বার্তা লুকানো আছে। যেমন:
– সংখ্যা ৭ কে “মিস্টিক” বা রহস্যময় ধরা হয়।
জন্মতারিখের সংখ্যা যোগ করে ভবিষ্যৎ বের করার চেষ্টা করা হয়।
– ১১:১১ কে “ইউনিভার্স থেকে সিগনাল” বলা হয়।
আসলে এটি কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ছাড়া শুধু কুসংস্কার।
২. Occult (গুপ্ত বিদ্যা):
Occult শব্দের মানে হচ্ছে গোপন, অদৃশ্য জ্ঞান বা শক্তি।
জাদুবিদ্যা, ভবিষ্যদ্বাণী, হাত দেখা, ট্যারট কার্ড, জ্যোতিষশাস্ত্র, সংখ্যাতত্ত্ব—এসব occult-এর অংশ।
এগুলোর সাথে শয়তানী প্রভাব ও কুসংস্কার মিশ্রিত থাকে। অনেক সময় occult-এ শয়তানকে আহ্বান করা হয়, বা জিন ব্যবহার করা হয়।
ইসলাম এ ধরনের সব কিছু হারাম করেছে।
৩. New Age Spirituality:
New Age Spirituality হলো আধুনিক এক ধরণের মিশ্রিত বিশ্বাস ব্যবস্থা, যা হিন্দু–বৌদ্ধ, যোগ, ধ্যান, পশ্চিমা occult, numerology, meditation, cosmic energy, law of attraction ইত্যাদি একত্রে মিশিয়ে বানানো।
– এরা বলে, মানুষ “Universe-এর energy” বা “Cosmic power”-এর সাথে সংযুক্ত হতে পারে।
– আল্লাহর পরিবর্তে “Universe, Energy, Light” ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে।
– এরা reincarnation (পুনর্জন্ম), karma (কর্মফল), chakras (শক্তি কেন্দ্র), aura (শরীরের আলো/শক্তি) বিশ্বাস করে।
আসলে এগুলো সবই ইসলামের বাইরে কুসংস্কার ও শিরকী বিশ্বাসের অংশ।
Mirror Image এর ব্যাপারে ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি:
ইসলাম সংখ্যাকে শুধুই গণনার মাধ্যম বলে মানে। সংখ্যার মধ্যে কোনো রহস্য বা গায়েব নেই। জ্যোতিষ, সংখ্যাতত্ত্ব, occult, বা “new age spirituality” সবই শিরক ও বিদআত-এর পথে নিয়ে যায়।
আল্লাহ বলেন:
“আর গায়েবের জ্ঞান শুধু আল্লাহর কাছেই রয়েছে।” (সুরা ইউনুস ১০:২০)
সংখ্যা, প্যাটার্ন, সিম্বল দেখে ভবিষ্যৎ বা লুকানো বার্তা বের করা কুরআন-সুন্নাহর বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক।
আল্লাহ বলেন:
ٱلۡيَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِينَكُمۡ وَأَتۡمَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ نِعۡمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ ٱلۡإِسۡلَـٰمَ دِينٗاۚ
“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণাঙ্গ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে গ্রহণ করলাম।” (সুরা মায়েদাহ ৫:৩)
অর্থাৎ দ্বীন সম্পূর্ণ হয়ে গেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমন (সুন্নাহ) ও কুরআন নাযিলের মাধ্যমে। নতুন করে সংখ্যা–তত্ত্ব, আয়াত মিলানো, বা “mirror number” কে কুরআনের সাথে জুড়ে দিয়ে দ্বীনের নতুন কোন ব্যাখ্যা বের করার প্রয়োজন নেই, অনুমতিও নেই।
★ IslamQA এর ফতোয়া:
ইসলামিক স্কলাররা বলেন, এ ধরনের বিশ্বাস তাওহীদে বিশ্বাস বিরোধী। সংখ্যার মধ্যে রহস্য, ফেরেশতার বার্তা বা ভবিষ্যতের ইঙ্গিত আছে – এমন ধারণা নেওয়া হলো শিরক ও জাহেলিয়াতি কাজ। ইসলামিকভাবে, সংখ্যার কোনো আধ্যাত্মিক শক্তি নেই।
রেফারেন্স:
IslamQA (Fatwa No. 229176 & 215418) → বলা হয়েছে:
সংখ্যা দ্বারা ভাগ্য নির্ধারণ, ভবিষ্যৎ জানা, বা ফেরেশতার বার্তা বিশ্বাস করা হারাম। এটি আল্লাহর ওপর নির্ভরশীলতার বিপরীত।
আল্লাহ বলেন:
“তারা জ্যোতিষী ও ভাগ্য গণনাকারীদের অনুসরণ করে, অথচ ভবিষ্যতের জ্ঞান আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে নেই।” (সূরা আন-নামল 27:65)
সংখ্যাগুলো কেবল গণনার জন্য, এগুলো কোনো আধ্যাত্মিক শক্তি বহন করে না। মুসলিমদের জন্য এসব থেকে বেঁচে থাকা ফরজ।
কেউ যদি মিরর নাম্বার দেখে কুরআনের আয়াত স্মরণ করে, তাহলে বিষয়টা কেমন হবে? যেমন ১১:১১ দেখে ১১ নং সূরার ১১ নং আয়াত স্মরণ করে?
– কেউ যদি mirror number বা যে কোন number দেখে সেই আয়াত বা কুরআনের কথা স্মরণ করে, তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু এটাকে আল্লাহ বা ফেরেশতাদের পক্ষ থেকে বিশেষ কোন বার্তা বা গাইডেন্স মনে করে; তাহলে তা বিদআত হবে, শিরকের পর্যায়েও চলে যেতে পারে। এগুলোর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তিও নেই, ইসলামেও স্বীকৃত নয়, এগুলো কেবলই কুসংস্কার ও ভ্রান্ত বিশ্বাস।
Dr Assim Al Hakim এর ফতোয়া: https://m.youtube.com/watch?v=N3aHF9RajTk…
