ছোটবেলায় (ক্লাশ থ্রী-ফোর) আমার খুব রাগ ছিল। পাড়ায় ক্রিকেট খেলার সময় আউট হয়ে গেলে ব্যাট চালিয়ে ফেলতাম-ভাবখানা এমন সবাই আউট হলেও আমি আউট হওয়া যাবে না। তাই আমি আউট হলেই উইকেট কীপারসহ আশেপাশের ফীল্ডাররা সরে যেত-ব্যাটের বাড়ি থেকে বাঁচার জন্য! সবসময় যে বুঝেশুনে এমন করতাম তা না। আর স্কুলের স্যারেরা আব্বাকে বলত-‘আপনার ছোট ছেলে খুব বেশী কথা বলে’। তাই ছোট থেকেই বাচাল উপাধি নিয়ে বড় হয়েছি। বড় হওয়ার সাথে সাথে রাগ কমতে থাকে আর কলেজে আসার পর সচেতনভাবে কথা কমিয়ে দিতে চেষ্টা করলাম। এখন বাসায় আসলে আম্মার সবচেয়ে কমন কথা-‘এত চুপচাপ কেন? মন খারাপ?’, ‘একদমই কথা বলিস না। কী হল তোর?’ আর ইসলাম বুঝতে শুরু করার পর বলতে গেলে রাগ বা হতাশা কোনটাই তেমন ঘায়েল করতে পারে না আমাকে। সবসময় একটা Win-Win সিচুয়েশনে থাকি, মনে হয় আমারতো হারানোর কিছুই নাই।
দাড়ি রাখার কারণে আমার ফ্যামিলিতেই (আব্বা-আম্মা না, দূর সম্পর্কের মানুষজন, আমার দাড়ি রাখায় আম্মার ১০০% সাপোর্ট ছিল) কত কটু কথা যে শুনতে হয়েছে! ভাইয়ার বিয়েতে আমার টাখনুর আধা হাত উপরে কাপড় দেখে মানুষজন আব্বার কাছে গেছিল কৈফিয়ত তলব করতে-“ছোট ছেলের এই অবস্থা কেন !!!??” তো, সত্যি বলতে এসব হতাশামূলক কথা, অপবাদ বা আরও যেসব বিপদ ফেস করতে হয়েছে আমাকে সেগুলো নিয়ে যখন চিন্তা করেছি পরে তখন এর মধ্যে ভাল বৈ খারাপ কিছু পাইনি-প্রতিটা ঘটনাই আমার ভাঙ্গাচোরা স্বপ্নগুলোকে জোড়া লাগিয়ে দিয়েছে, নিজের পাপের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, আল্লাহ যে তাঁর বান্দাদেরকে দুনিয়ায় বিপদের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাবেন সেকথাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। দিনশেষে তাই- আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ ফর এভরিথিং।
১৯ জুন, ২০১৪